পারিবারিক মূল্যবোধ একটি মানুষের ব্যক্তিত্ব গঠনে মূখ্য অবদান রাখে। তবে ব্যক্তিত্বহীনরা সমাজের বোঝা। মাদক রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের সাথে আসক্ত ব্যক্তিকেও ধ্বংস করছে। যে জাতি রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছে, সে জাতি সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূল করতে পারে। একারণে, সর্বাবস্থায় মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সকলকে একযোগে কাজ করার আহব্বান জানিয়েছেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে সাতক্ষীরার সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের আয়োজনে মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
এসময় পুলিশ সুপার বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। বিভিন্ন সময় মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের বেশ কয়েকজন সাহসী সহকর্মী জীবন দিয়েছেন। তবুও অপশক্তির কাছে বাংলাদেশ পুলিশ কখনও মাথা নত করিনি।
তিনি বলেন, মাদককে শুধু একটি পুলিশ বিষয়ক সমস্যা মনে করি তাহলে একে নির্মূল করতে সমস্যা হবে। এটা আমাদের সকলের সমস্যা। সবাই মিলে এর বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। মাদক একটি সামাজিক সমস্যা। এই সমস্যাকে সামাজিকভাবে সমাধান করতে হবে। সব শ্রেণীকে নিয়ে এই মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলে নির্মূল করতে হবে।
এসময় ‘মাদকের সাথে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে’ বলে উপস্থিত এক ব্যক্তি জানালে পুলিশ সুপার জানান, তিনি সাতক্ষীরা যোগদানের দুই সপ্তাহের ভিতরে যে সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টর অভিযোগ ছিল তাদেরকে অন্যত্র বদলী করিয়েছেন। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির জন্য সু-পারিশ করেছেন। তবে, কেউ যদি সু-নিদিষ্টভাবে কোন পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টর প্রমাণ দিতে পারে তাহলে ওই পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং তথ্যদাতাকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মাননা দেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার বলেন,সাতক্ষীরা জেলায় ২০১৩-১৪ সাল আর কোনো দিন ফিরে আসবেনা।যারা স্বাধীনতা বিশ্বাস করেনা, যারা মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বাস করেনা, যারা বার বার আমাদের জাতীয় পতাকা কে খাঁমছে ধরতে চান,তারা সাবধান হয়ে যান।সাতক্ষীরার মানুষ কে সাথে নিয়ে তাদের কে কঠোর হস্তে দমন করবে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ।
এর আগে ঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক শাহাজাহান কবিরের সঞ্চালনায় ভাড়ুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সজীব খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মীর আসাদুজ্জামান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান,ডিবির ওসি বাবলুর রহমান প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, মাদক একটি বড় ধরনের খারাপ নেশা। শুধুমাত্র পুলিশি ব্যবস্থা ও আলোচনা দিয়ে নেশামুক্ত করা যাবে না। সৃষ্টির লগ্ন থেকে মানুষ কোন না কোন নেশায় আসক্ত। মাদক একটি খারাপ নেশা। এই নেশাকে দমন করতে হলে অন্য একটি নেশাতে আকৃষ্ট করতে হবে। নতুন নেশা হতে পারে বই পড়া, খেলাধুলা, শারীরিক চর্চা, সাংস্কৃতি চর্চাসহ বিভিন্ন কিছু। এক্ষেত্রে, সকলের পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূল করা সম্ভব বলে জানান বক্তারা।