থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) পুলিশ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ নানা পদে ঘুরেফিরে একই মুখ দেখা যায়। অনেক সময় প্রভাবশালীদের তদবিরে ওসিদের পদায়ন করা হয় বলে অভিযোগও রয়েছে। তবে ওসিসহ মাঠ পর্যায়ে পুলিশের ভালো পদে ঘুরেফিরে একই ব্যক্তির বহাল থাকার দিন শেষ হচ্ছে। ওসি পদে পদায়নে একটি নতুন নীতিমালা করা হচ্ছে। সেখানে একজন পুলিশ কর্মকর্তা কতদিন ওসি পদে থাকতে পারবেন, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া চাকরি জীবনে সর্বোচ্চ কতটি থানায় ওসি পদে দায়িত্ব পালন করা যাবে, সেটাও থাকবে নতুন নীতিমালায়।
আশা করা হচ্ছে, নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে পরিদর্শক হওয়ার পর অবসর পর্যন্ত বাকি চাকরি জীবন কেউ আর ওসির চেয়ার আঁকড়ে থাকার সুযোগ পাবেন না। এ ছাড়া বর্তমান পুলিশ প্রশাসন ওসিসহ সব পদে পদায়নের ক্ষেত্রে সততা, দক্ষতা, যোগ্যতা ও মানবিক গুণাবলিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এমনকি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কীভাবে ভালো আচরণ করতে হবে সেটা নিশ্চিত করার জন্য সারদা পুলিশ একাডেমি ছাড়াও বাহিনীর সব ইউনিটে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন কেস স্টাডি ধরে ওইসব ঘটনায় পুলিশ কী কী ভুল করেছিল তার ডকুমেন্টারি দেখিয়ে ভবিষ্যতে শোধরানোর পথ বাতলে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম(বার) সমকালকে বলেন, পদায়ন হবে যোগ্যতা, দক্ষতা ও সুনামের ওপর নির্ভর করে। ওসি হওয়ার জন্য অবাঞ্ছিত প্রতিযোগিতা বা 'র্যাট রেস' আমরা বন্ধ করতে চাই। ওসি পদায়নের জন্য একটা নতুন নীতিমালা করার পরিকল্পনা হচ্ছে। সরকারের অনুমতি পেলে এটা বাস্তবায়ন করা হবে। শুধু ওসি নয়, পুলিশের অন্যান্য পদেও দীর্ঘদিন থাকার কারণে যারা ওই এলাকার খারাপ লোকের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলেছে, আমরা তাদেরও কঠোর বার্তা দিতে চাই। পুলিশ সদস্যদের জন্য একটি বাস্তবসম্মত বদলি ও পদায়নের নীতিমালা থাকবে। যারা মানুষের সঙ্গে মানবিক আচরণ করবে না, অসৎ কর্মকাণ্ডে জড়াবে, তারা ভালো পদে চাকরি করতে পারবে না।
আইজিপি বলেন, আমাদের স্বপ্ন- পুলিশ হবে সবচেয়ে ক্লিন সংগঠন। মানুষের ভরসার জায়গা হবে তারা। যেসব পুলিশ সদস্য মানুষের হয়রানি ও বিপদের কারণ হবে, গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন ও বদলির ক্ষেত্রে তারা বিবেচনায় আসবে না।
তিনি আরও বলেন, তবে পুলিশের কোনো সদস্য যদি বিশেষায়িত কোনো ইউনিটে থেকে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলে, সেটাকে নিরুৎসাহিত করা হবে না। কেউ যদি নৌ পুলিশে তার ক্যারিয়ার গড়তে চায়, তাহলে তাকে ওই সম্পর্কিত আইন-কানুন ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে। সরকার পুলিশের অনেক বিশেষ ইউনিট তৈরি করেছে। সেখানে কোনো অফিসার বিশেষ জ্ঞান অর্জন করলে ওই ইউনিট উপকৃত হবে। তবে এটাও ঠিক যে, পুলিশ একটি বিশাল সংগঠন। রাতারাতি সব বদল করলে ভুল হওয়ার সুযোগ থাকবে। অনেক বিচার-বিশ্নেষণ করেই সতর্কতার সঙ্গে নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশের ৭ হাজারের মতো পরিদর্শক পদ রয়েছে। থানার সংখ্যা ৬৫০। সবারই স্বপ্ন থাকে ওসি হওয়া। এটা দোষেরও নয়। আমরা চাই, ওসি পদে যেতে ভালো কর্মকর্তাদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা হোক। ৯ থেকে ১২ বছর এসআই পদে চাকরি করলে পরিদর্শক হন। আবার পরিদর্শক পদে ১৫ থেকে ১৮ বছর সময় পার করেন। এরপর পদোন্নতি পেয়ে এএসপি ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোক। নীতিমালায় থাকবে কতটি থানায় সর্বোচ্চ কত বছর ওসি পদে কেউ থাকতে পারবেন। কক্সবাজারে সাম্প্রতিক বদলির ব্যাপারে আইজিপি বলেন, নানা কারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। আমরা সেখানকার পুলিশ প্রশাসনকে নতুনভাবে সাজাতে চেয়েছি। সেখানে পুরোপুরি নতুন ব্লাড ট্রান্সফিউশন করা হয়েছে। সাম্প্রতিক অন্য সব বদলির ক্ষেত্রে আমরা যাচাই-বাছাই করে দক্ষ ও সৎ কর্মকর্তাদের মূল্যায়নের চেষ্টা করেছি।
ডিএমপি কমিশনার ও পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ, বদলি ও পদায়নের জন্য পয়সা লাগে- এই সংস্কৃতি থেকে পুলিশ পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে চায়। এটা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, সর্বশেষ সবক'টি পদোন্নতি পরীক্ষা শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে হয়েছে। পুলিশের অনেকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পয়সা নেওয়ার সময় বলে- নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত সবাইকে দিতে হয় ভাই। পয়সা তো একা খাই না। আমরা এই চেইন ভেঙে দিচ্ছি। দেখতে চাই, পয়সাটা কে খায়। যে খায় দায় তাকেই নিতে হবে।
শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ডিএমপিতে পদায়নের আগে আমরা ৫-৭ জন অফিসার বসি। ওই কর্মকর্তার অতীত কর্মকা, যেখানে যেখানে চাকরি করেছেন সেখানে কী ধরনের ভূমিকায় দেখা গেছে- এসব বিচার-বিশ্নেষণ করা হয়। এরপরও অনেক সময় দেখি, পদে বসানোর পর তার ভেতর থেকে নেতিবাচক জিনিস বেরিয়ে আসছে। তখন তার আসল রূপ দেখা যায়। ভালো কিছু করতে হলে পরিবর্তন দরকার।
তিনি বলেন, পদায়নের নীতিমালা থাকলে একজনের পক্ষে প্রভাবশালী মহল থেকে তদবির এলেও বলা যাবে যে, নীতিমালা অনুসারে ওই কর্মকর্তাকে পদায়ন করা সম্ভব নয়। পদে থেকে অবৈধ সুবিধা নেওয়ার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ করতে চাই আমরা। যাতে দু-তিন বছর ওসি পদে চাকরি করলেই ওই কর্মকর্তার শখ মিটে যায়। তখন তিনি কোনো পদকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করবেন না। দেখা গেল, একজন কর্মকর্তা ঘুরেফিরে তিন-চার জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পাচ্ছেন। বারবার তিনি কেন প্রাইজ পোস্টিং পাবেন। অন্য যারা সৎ, যোগ্য ও দক্ষ রয়েছেন তারাও যাতে ভালো জায়গায় পোস্টিং পান, সেই পরিবেশই তৈরি করা হচ্ছে।
সম্প্রতি বেশ কয়েকজন ওসিসহ পুলিশের কিছু সদস্যের বিতর্কিত কাজের জন্য বাহিনীর নীতিনির্ধারকরাও বিব্রত। প্রায়ই দু-একটি ঘটনা পুলিশের অনেক ভালো কাজকে ম্লান করে দেয়। সম্প্রতি সিলেটের পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রায়হান আহমেদ নামে এক যুবককে নির্যাতন করা হলে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেনসহ চার পুলিশ সদস্য বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।
পুলিশের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, দু-চারজন ওসি এবং অন্যান্য পদে থাকা সদস্যদের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে ভাবমূর্তি নিয়ে পুলিশ অস্বস্তিতে পড়ে। গত আগস্টে লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মাহফুজ আলম স্যানিটাইজার দিয়ে পরিস্কার করে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ওই ভিডিও ভাইরাল হলে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
কক্সবাজারে চেকপোস্টে সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের অনেক বিতর্কিত ভূমিকার তথ্য সামনে আসে। এর আগে ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার পর সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের অপেশাদার আচরণের খবর জানা যায়। ওই ঘটনায় পর দায়ের করা মামলায় ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনায় ফেনীর তৎকালীন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ময়মনসিংহ রেঞ্জে একটি থানার ওসি বহু বছর ধরে ঘুরেফিরে সব বড় থানায় চাকরি করে আসছেন। অভিযোগ আছে, অনৈতিকভাবে তিনি অনেক বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন।
গত বছর ক্যাসিনোকাদেলি করা হয়েছিল। ওই সময় মতিঝিল থানার ওসি ওমর ফারুককে বদলি করা হয়। সাহিদুর রহমান বংশাল থানায় দায়িত্ব পালনের সময় তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলে সহায়তার অভিযোগ ওঠে। এরপর তাকেও বদলি করা হয়। একই ঘটনায় লালবাগ বিভাগের তৎকালীন উপপুলিশ কমিশনার ইব্রাহীম খানকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পল্লবী থানার সাবেক ওসি দাদন ফকিরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ছিল। পরে তাকে ডিবিতে বদলি করা হয়।
পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, যারা দীর্ঘদিন ঘুরেফিরে বিভিন্ন থানায় ওসি পদে রয়েছেন কিন্তু সততা, যোগ্যতা ও আচার-ব্যবহার ভালো নয়- এমন সদস্যদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সদর দপ্তর এই তালিকা করেছে। পর্যায়ক্রমে ওসি পদ থেকে তাদের অন্যান্য ইউনিটে সরিয়ে দেওয়া হবে। এই তালিকায় ডিএমপির বেশ কয়েকজন ওসিও রয়েছেন। তাদেরও শিগগির রদবদল করা হবে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর তুরাগ থানার ওসি নুরুল মোত্তাকীনকে সরিয়ে সিআইডিতে দেওয়া হয়। সর্বশেষ সিলেটের কমিশনার গোলাম কিবরিয়াসহ ১৯ জনকে বদলি করা হয়। তাদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। বিতর্কিত ওই কর্মকর্তাদের কম গুরুত্বপূর্ণ পদে পাঠানো হয়েছে। তবে অভিযোগ আছে, এখনও সিলেট মহানগর, রেঞ্জ ও চট্টগ্রামে অনেক অসাধু কর্মকর্তা রয়েছেন যারা অনেক দিন ধরে একই পদে আছেন। আবার চাকরিস্থলের আশপাশের জেলায় তাদের গ্রামের বাড়ি।
পুলিশ ইন্টারন্যাল ওভারসাইটের (পিআইও) মাধ্যমে বাহিনীর সদস্য ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের ব্যাপারে বিশদ খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পিআইও শক্তিশালী হওয়ায় পুলিশের অধিকাংশ সদস্যের কর্মকাণ্ড এক ধরনের নজরদারিতে এসেছে। বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শকের হাত ধরেই পিআইওর যাত্রা শুরু হয়েছিল।
পুলিশের এক কর্মকর্তার ভাষ্য- সৎ, যোগ্য ও পেশাদার কর্মকর্তারা দায়িত্বশীল পদে দীর্ঘদিন থাকলেও সমস্যা তৈরি হয় না। যখন অসৎ কোনো কর্মকর্তা ঘুরেফিরে সব 'প্রাইজ পোস্টিং' পান, তখন নাগরিকরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পান না এবং অন্য সৎ কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। রেওয়াজ অনুযায়ী ওসি বা অন্য পদে ২-৩ বছর একজনের থাকার কথা। তবে যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অনেকে বছরের পর বছর একই চেয়ারে আছেন।
পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, মাঠ পর্যায়ে অনেক পুলিশ সদস্যের আচরণ ও বডি ল্যাঙ্গুয়েজের কারণে বাহিনীর ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সেবাপ্রত্যাশী সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে 'কমান্ডের' সুরে কর্কশ আচরণ করা হয়। থানা, পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, রাস্তায় ট্রাফিক সার্জেন্ট সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রথমে 'সালাম দেওয়ার সংস্কৃতি' বলতে গেলে ভুলেই যান। প্রথমেই কাউকে বলেন, 'এই দাঁড়ান'। 'এই দাঁড়া'। সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের মধ্যে অন্যকে 'সম্মান' দেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চান এই বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। শুরুতেই কারও সঙ্গে ধমকের সঙ্গে কথা বলা যাবে না।
মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের আচরণগত সমস্যার বেশকিছু ঘটনার ভিডিও নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছে। সেই ডকুমেন্টারি এরই মধ্যে সারদায় প্রশিক্ষণরত এক হাজার ৩০০ এসআই ও ১০০ সহকারী পুলিশ সুপারকে দেখানো হয়েছে। এ সময় ভবিষ্যতে কীভাবে নাগরিকদের সঙ্গে আচরণ করতে হবে, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ডিএমপিসহ দেশের সব রেঞ্জ ও ইউনিটের সদস্যদের আচরণগত বিষয়ে বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, গুলশানে একজন নারী প্রাইভেটকারচালকের পাশের সিটে তার ভাই বসা ছিলেন। ভাই নেমে যাওয়ার পর গাড়ির দরজা ঠিকমতো লাগাননি তিনি। পরে গাড়ির সিট থেকে ওই নারী একজনকে গাড়ির দরজা লাগানোর অনুরোধ করেছিলেন। তখন গাড়ির পাশে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্ট মনে করেছিলেন, ওই নারীচালক তাকে দরজা লাগিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন। এ নিয়ে ওই চালকের সঙ্গে সার্জেন্টের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে দেখা যায়, ভাই গাড়ি থেকে নামার পর লুকিং গ্লাস দিয়ে দেখে এক পথচারীকে দরজাটি লাগিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন ওই নারীচালক। এ ঘটনাটির সচিত্র বর্ণনা দিয়ে পুলিশের আচরণ শোধরানোর পথ দেখাচ্ছেন বাহিনীর নীতিনির্ধারকরা।
একই ধরনের আরও সাতটি ঘটনার সচিত্র ভিডিও তৈরি করে মানবিক পুলিশ গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজেদের ভূমিকার কথা তুলে ধরা হচ্ছে। পুলিশ এই উদ্যোগের নাম দিয়েছে- 'সুন্দর ব্যবহারে পুলিশের সম্মান বাড়ে।' এটাও বলা হচ্ছে, কিছু হারিয়ে কেউ থানায় জিডি করতে গেলে তাকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করতে হবে। হারানো ব্যক্তির কষ্টের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করে 'দুঃখ' প্রকাশ করে তাকে আইনি সহায়তা করতে হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মাল্টিমিডিয়া ও পাবলিসিটি) কামরুজ্জামান বলেন, কোন কোন ঘটনায় মাঠ পর্যায়ে আমাদের আচরণগত সমস্যা কোথায় ছিল তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো হচ্ছে। কীভাবে আচরণগত সমস্যা দূর হবে- এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ চলছে। ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে এসব দৃশ্য দেখানোর পর ভবিষ্যতে একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সুত্র : সমকাল নেট।