দেশের খ্যাতিমান কলামিস্ট, গবেষক, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)।
বুধবার সন্ধ্যা সাতটার কিছু সময় পর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও এসডিএফ চেয়ারম্যান মো: আবদুস সামাদ। এসডিএফ চেয়ারম্যান তার ব্যক্তিগত ফেইজবুক আইডিতে লিখেছেন.....
" সৈয়দ আবুল মকসুদ এক অসাধারন মোহনীয় মানুষ। নির্লোভ। গবেষক।মানবতাবাদী।পরিবেশ বন্ধু।ঢাকার চারপাশের নদী উদ্ধার অভিযানে তিনি ছিলেন আমাদের উচ্চ কন্ঠ সমর্থক।কত চমৎকার সময় কাটিয়েছি।
আল্লাহ নিয়ে গেলেন এই জমিনের একজন শ্রেষ্ঠ মানুষকে।প্রার্থনা তাঁর হেফাজতের পরম করুনাময়ের কাছে"
সৈয়দ আবুল মকসুদের ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ তার বাবার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, তার বাবা বাসায় অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। ওই অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, তিনি আগেই মারা গেছেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ দেশের খ্যাতিমান সাংবাদিক, কলামিস্ট, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও লেখক। তিনি তার গবেষণাধর্মী প্রবন্ধের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। বিভিন্ন দৈনিকে নিয়মিত কলাম লিখতেন। তিনি বিখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবনী ও কর্ম নিয়ে গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন। পাশাপাশি কাব্যচর্চাও করেছেন। তার রচিত বইয়ের সংখ্যা চল্লিশের উপর। বাংলা সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ঋষিজ পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
সৈয়দ আবুল মকসুদ ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ আবুল মাহমুদ ও মা সালেহা বেগম।
সৈয়দ আবুল মকসুদের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে। এটি ছিল পাকিস্তান সোশ্যালিস্ট পার্টির মুখপত্র। পরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি সমর্থিত সাপ্তাহিক ‘জনতা’য় কাজ করেন কিছুদিন। পরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বার্তা সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৮ সালের ২ মার্চ বার্তা সংস্থার সম্পাদকীয় বিভাগের চাকরি ছেড়ে দেন।
১৯৮১ সালে তার কবিতার বই বিকেলবেলা প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা প্রকাশিত হয়। মানবাধিকার, পরিবেশ, সমাজ ও প্রেম নিয়ে তিনি কবিতা লিখেছেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রমুখ প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন।
আবুল মকসুদের স্ত্রী কলেজ শিক্ষক। মেয়ে জিহান ও ছেলে নাসিফ দুজনই ব্যাংকার।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জিমি, সিটিজেন জার্নালিস্ট, সাতক্ষীরা।
Copyright © 2024 Update Satkhira. All rights reserved.