♠♠♠♠♠♠
রুবেল হাসান (রনি), ভোমরা,সাতক্ষীরা :
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২১নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ আব্দুল মান্নান ডিডিএফ সিনিয়র হাফেজি মাদরাসা কেন্দ্র পরিদর্শন করতে গিয়ে নির্বাচন পরিপন্থী কাজ কাজ করার অপরাধে নৌকার একজন নারী সমর্থককে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেন সাতক্ষীরা বিজিবি'র ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল জনাব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।
বরিশালে সিটি নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত সংবাদকর্মী সুত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল দশটার পর আলোর খবর সহ অন্য সকল প্রতিনিধিদের সামনেই এমন ঘটনা ধরা পরে। এই কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেয়া হচ্ছে। মোট ভোট দেবেন দুই হাজার ২৮৬জন নারী ভোটার।
সকালে অন্যান্য কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় খবর আসে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের উল্লেখিত কেন্দ্রে ঝামেলা হচ্ছে।
খবর পেয়ে সেখানে যাওয়ার পর দেখা যায়, ভেতরে ভোটাররা ঠিকঠাক মতো ইভিএমে ভোট দিলেও একজন নারী ঘুরে ঘুরে ভোটারদের কানে কানে একটি প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য বলে দিচ্ছেন। কখনো কখনো বুথের মধ্যে ঢুকেও এই নারীকে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যাচ্ছিল। এই বিষয়টি নিয়ে কিছু ভোটার প্রতিবাদ করলেও তেমন কোনো সাড়া পাচ্ছিলেন না। প্রিজাইডিং কর্মকর্তাও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন না।
হঠাৎ নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্বরত বিজিবি'র দুই কর্মকর্তা (লেঃ কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান এবং লেঃ কর্নেল তৌহিদ) কর্মকর্তা কয়েক জন গার্ড নিয়ে ভোট কেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করেন। এসেই তাঁরা দ্বিতীয় তলায় প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আল আমিন সরোয়ারের রুমে চলে যান তারা।
এই কেন্দ্রে সব প্রার্থীর এজেন্ট নেই এমন অভিযোগ শুনে তারা এই কেন্দ্র পরিদর্শনে আসছেন জানালে- প্রিজাইডিং কর্মকর্তা অভিযোগ অস্বীকার করলে, তাকে সাথে নিয়ে বুথ পরিদর্শন করতে যাওয়ার জন্য বিজিবি'র এই কর্মকর্তারা বলেন, চলুন গিয়ে দেখি ঠিক আছে কিনা আপনার কথা। সেখানে গিয়ে একটি বুথে ধানের শীষ ছাড়া অন্য সব মেয়র প্রার্থীর এজেন্টদের উপস্থিতি দেখতে পান।
এরপরই বুথের বাইরে বের হয়ে সেই নারীর কাছে বিজিবি'র এই কর্মকর্তারা জানতে চান তিনি এখানকার ভোটার কিনা। মহিলার নিকট হতে হ্যাঁ এই জবাব আসার পর আবার প্রশ্ন করেন, তিনি (উক্ত মহিলা) ভোট দিয়েছেন কিনা। নৌকা প্রতিকের এই মহিলা কর্মী বললেন না এখনো দেইনি।
বিজিবি'র এই দুই কর্মকর্তা মিহিলা কর্মিকে বললেন, দ্রুত ভোট দিয়ে চলে যান। মহিলা তখন বলেন, আমি যাবোনা কারন আমি একজন এজেন্ট নারী কর্মী।
তখন ৩৩ বিজিবি'র অধিনায়ক লেঃকর্ণেল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আপনি এজেন্ট নারীকর্মী ভালো কথা তাহলে বাহিরে ঘুরছেন কি কারনে?
তখন এক কর্মকর্তার কানে কানে ওই নারী কর্মী বলেন, আমি নৌকার লোক।
সাথে সাথে বিজিবি'র এই দুই কর্মকর্তা মহিলার উপরে রাগান্বিত হয়ে বলেন, সময় থাকতে দ্রুত বের চলে যান এবং পরবর্তীতে ভোট কেন্দ্রের ত্রি-সীমানায় আপনাকে যেন না দেখি।
তবুও মহিলা সহজে কেন্দ্র ত্যাগ করতে রাজি না হলে ৩৩ বিজিবি অধিনায়ক লেঃকর্ণেল মোস্তাফিজুর রহমান ডিউটিরত পুলিশ বাহিনীকে বললেন, এই নারী পুলিশ কোথায়?
এই মহিলা কে ধরে গাড়িতে তোলো।
এ সময় পাশে লাইনে দাঁড়ানো কয়েকজন নারী ভোটার বিজিবি'র কর্মকর্তা লেঃ কর্ণেল মোস্তাফিজুর রহমানকে বলেন, এই মহিলা সাধারন ভোটারদেরকে ডিস্টার্ব করছে লাগাতার। খালি ঘোরে আর সবাইকে নৌকায় ভোট দিতে বলছে।
এই সময় পরিস্থিতি খারাপ দেখে দ্রুত ওই নারী কেন্দ্র থেকে চলে যান। অন্য একটি বুথে ঢুকে কারো কোনো সমস্যা আছে কিনা জানতে চান বিজিবির কর্মকর্তা লেঃ কর্ণেল মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এবং লেঃ কর্ণেল তৌহিদ।
এসময় তাকে একজন কমিশনারের এজেন্ট পেছনের অন্য একজন কমিশনারের এজেন্ট তাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ করেন।
এই কথা শুনার সাথে সাথে ৩৩ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোস্তাফিজুর রহমাম বলেন, আপনারা সবাই শোনেন পিছনে যা হয়েছে এখানেই শেষ।
এমনটা আবার শুনলে শুধু ধরব আর টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলব। কোনো ঝামেলা করা যাবে না। জাল ভোট কাউকে দিতে সাহায্য করার কোনো সুযোগ কাউকেই দেওয়া হবে না। বিজিবি'র এই দুই কর্মকর্তার এমন দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ড দেখে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত সকল সাধারন ভোটাররা সাধুবাদ জানিয়েছেন।