এক হাজার আটশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেড় লক্ষাধিক শিশুদের একযোগে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ উপস্থাপন (অনুকৃতি) এর মাধ্যমে খুলনায় উদযাপিত হলো ৭ই মার্চ জাতীয় দিবস।
জুম অ্যাপের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে খুলনার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই ভাষণ উপস্থাপন করে। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ (রবিবার) বিকেলে সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ চত্ত্বরে ছিল শিশু বঙ্গবন্ধু সমাবেশ ও ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস উদযাপনের মূল আয়োজন। চাইল্ড ইন্টিগ্রিটি ও শিশু বঙ্গবন্ধু ফোরাম এই অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনা করে।
শিশুদের একযোগে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ উপস্থাপনা শেষে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতার জন্য এই বাংলায় খন্ডখন্ড অনেক বিপ্লব হয়েছে। ক্ষুদিরাম, ফকির মজনুশাহ, তিতুমীর, সূর্যসেন, শরীয়তউল্লাহসহ অনেকেই রক্ত দিয়েছেন। কিন্তু স্বাধীনতা আসেনি। হাজার বছর ধরে স্বাধীনতার জন্য বাঙ্গালির যে আকুতি সেই স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। যে ভাষণ শুনে সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালি এক সারিতে এসে দাঁড়িয়েছিল তা এই ৭ই মার্চের ভাষণ। ৭ই মার্চের ভাষণ নতুন স্বপ্নে উজ্জীবিত করেছিল। অথচ একসময় এ ভাষণ প্রচারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু ইতিহাসকে কখনও চাপা দেওয়া যায় না। তাই বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের মতো আর কোন ভাষণ এত বেশিবার প্রচার হয়নি। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এনে দিয়েছেন অর্থনৈতিক মুক্তি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতিহাস বিকৃতির দিন শেষ। খুলনার এই আয়োজন ৭ই মার্চ কেন্দ্রিক সবচেয়ে ব্যতিক্রমী আয়োজন যা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের মাঝে যেমন ছড়িয়ে দেবে তেমনি তারা সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে। তাদের হাত ধরেই গড়ে উঠবে সোনার বাংলা।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এতে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ইসমাইল হোসেন, পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলমগীর কবীর।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন সরকারি অফিসের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকালে বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্র প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন খুলনা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ও মহানগর কমান্ড, কেসিসি’র মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ইসমাইল হোসেন, পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মহানগর ও অংগসংগঠনসমূহ, স্কুল-কলেজ, পেশাজীবী সংগঠনসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ৭ই মার্চে প্রদত্ত ভাষণ প্রচার করা হয়। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করে নিজস্ব কর্মসূচি উদযাপন করেন। শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনলাইনে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ বিষয়ে আলোচনা সভায় আয়োজন করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি ভবন ও স্থাপনাসমূহে আলোকসজ্জা করা হয়।
খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডি জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্ত্বরে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। খুলনা জেলা তথ্য অফিস বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক ডকুমেন্টারি ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
খুলনা জেলার সকল উপজেলায় অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হয়।