নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভাইরাল হয়ে পড়া ভিডিওটি শেয়ার না করার অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার এক প্রতিবেদনে পুলিশের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।
এতে বলা হয়, ভিডিওটি শেয়ার না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কাউকে এই ভিডিও শেয়ার করতে দেখা গেলে বা এই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার পেছনে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে একদল যুবক ও কিশোর। ছেলের বয়সী ওইসব কিশোর-যুবকের পায়ে ধরেও রেহাই পাননি ৩৭ বছর বয়সী ওই নারী।
ভয়ে ৩২ দিন আগের ঘটনাটি কাউকে জানাতেও পারেননি নির্যাতিতা কিংবা তার স্বজনরা। ২ সেপ্টেম্বর রাতের ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র গতকাল রবিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হলে তা জানাজানি হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া প্রায় দেড় মিনিটের ওই ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ওই গৃহবধূ নিজের সম্ভ্রম রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু নির্যাতনকারীরা তার পোশাক কেড়ে নিয়ে কিছু একটা বলতে থাকে। তিনি প্রাণপণে সম্ভ্রম রক্ষার চেষ্টা করেন, হামলাকারীদের ‘বাবা’ ডাকেন এবং তাদের পায়ে ধরেন। কিন্তু তারা ভিডিও ধারণ বন্ধ করেনি। বরং এক যুবক কয়েকবার ওই নারীর মুখে লাথি মারে ও পা দিয়ে মুখসহ শরীর মাড়িয়ে দেয়। এরপর তার শরীরে একটা লাঠি দিয়ে মাঝে মাঝেই আঘাত করতে থাকে। সে তার নগ্ন ছবি ধারণ করে। একজন হাত উঁচিয়ে তাকে ইন্ধন জোগায়। এ সময় ঘটনাটি ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেবে বলে উল্লাস প্রকাশ করে ‘ফেইসবুক’ ‘ফেইসবুক’ বলে চেঁচায় আরেকজন।
সোমবার সকাল পর্যন্ত ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামিসহ চারজনকে আটক করেছে র্যাব ও পুলিশ।
নির্যাতিতার বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস করেননি তারা। ওই যুবকদের ভয়ে ঘটনার পর তার মেয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রতিবাদ করে লেখালেখি হয়। বেগমগঞ্জের ঘটনায়ও রবিবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে প্রতিবাদ।