ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় সম্ভাব্য সকল ধরনের জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি গ্রহণ করতে উপকূলীয় সকল জেলার পুলিশ ইউনিটগুলোকে পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের ইউনিটগুলো সেই নির্দেশনা মোতাবেক সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বহুমূখী কার্যক্রম সম্পন্ন করে চলছে।
মানুষ যাতে ঘূর্নিঝড়ের ব্যাপার সতর্ক হয় এবং দ্রুততার সাথে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করে এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাইকিং, লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পুলিশ সদস্যগণ সাধারণ মানুষকে সচেতন করেছে। স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে নিয়ে পুলিশ সদস্যগণ সাধারণ মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছে। আশ্রিত মানুষের মধ্যে সরকার প্রদত্ত ত্রানের সুষ্ঠু বন্টনের জন্য সকল রকমের সহযোগিতা প্রদান করে চলছে।
ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশের জেলা ও থানা পর্যায়ের ইউনিটগুলোতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নজরদারি করে মাঠে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সাথে সমন্বর করছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করে চলছে। জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত সাড়াদানের জন্য প্রতিটি পুলিশ লাইন্সে প্রয়োজনীয় সংখ্যক রিজার্ভ ফোর্স QRT (Quick Response Team) হিসেবে রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে সকল ধরনের উদ্ধারকাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের মজুদ নিশ্চিত করছে।
এ ছাড়াও আপনার যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কন্ট্রোল রুমে ০১৭৬৯৬৯০০৩৩, ০১৭৬৯৬৯০০৩৪ নম্বরে এবং জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ যোগাযোগ করুন।
সর্বদাই জনগণের পাশে, বাংলাদেশ পুলিশ।
দুর্যোগ-পরবর্তী করণীয়
১। রাস্তাঘাটের ওপর উপড়ে পড়া গাছপালা সরিয়ে ফেলুন, যাতে সহজে সাহায্যকারী দল আসতে পারে এবং দ্রুত যোগাযোগ সম্ভব হয়।
২। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষকে বাড়ি ফিরতে সাহায্য করুন এবং নিজের ভিটায় বা গ্রামে অন্যদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিন।
৩। অতি দ্রুত উদ্ধার দল নিয়ে খাল, নদী, পুকুর ও সমুদ্রে ভাসা বা বনাঞ্চলে বা কাদার মধ্যে আটকে পড়া লোকদের উদ্ধার করুন।
৪। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণ যাতে শুধু এনজিও বা সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় বসে না থেকে নিজে যেন অন্যকে সাহায্য করে, সে বিষয়ে সচেষ্ট হতে হবে।
৫। ত্রাণের মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সচেষ্ট হোন। ত্রাণের পরিবর্তে কাজ করুন। কাজের সুযোগ সৃষ্টি করুন। রিলিফ যেন মানুষকে কর্মবিমুখ না করে কাজে উত্সাহী করে, সেভাবে রিলিফ বিতরণ করতে হবে।
৬। দ্বীপের বা চরের নিকটবর্তী কাদার মধ্যে আটকে পড়া লোকদের উদ্ধারের জন্য দলবদ্ধ হয়ে দড়ি ও নৌকার সাহায্যে লোক উদ্ধারকাজ শুরু করুন। কাদায় আটকে পড়া লোকের কাছে দড়ি বা বাঁশ পৌঁছে দিয়ে তাঁকে উদ্ধারকাজে সাহায্য করা যায়।
৭। ঝড় একটু কমলেই ঘর থেকে বের হবেন না। পরে আরও প্রবল বেগে অন্যদিক থেকে ঝড় আসার আশঙ্কা বেশি থাকে।
৮। পুকুরের বা নদীর পানি ফুটিয়ে পান করুন। বৃষ্টির পানি ধরে রাখুন।
৯। নারী, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ লোকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় ত্রাণ বণ্টন (আলাদা লাইনে) করুন।
১০। দ্রুত উত্পাদনশীল ধান ও শাক-সবজির জন্য জমি প্রস্তুত করুন, বীজ সংগ্রহ করুন এবং কৃষিকাজ শুরু করুন, যাতে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি ফসল ঘরে আসে।
ঘূর্ণিঝড় 'বুলবুল' মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের সহায়তা নিন
ঘূর্ণিঝড় 'বুলবুল' মোকাবিলায় উদ্ধার তৎপরতাসহ যে কোন জরুরি প্রয়োজনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কন্ট্রোল রুমে ০১৭৬৯৬৯০০৩৩, ০১৭৬৯৬৯০০৩৪ নম্বরে এবং জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ যোগাযোগ করুন।
দুর্যোগ মোকাবিলায়
১. প্রত্যেক জেলার পুলিশ অফিসে ডিএসবি'র তত্ত্বাবধানে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
২. প্রত্যেক থানায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
৩. প্রতিটি পুলিশ লাইন্সে প্রয়োজনীয় সংখ্যক রিজার্ভ ফোর্স QRT (Quick Response Team) হিসেবে রাখা হয়েছে।
৪. ওয়ার্ড মেম্বার, ইউপি চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ এলাকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাথে সংশ্লিস্ট ওসিসহ সিনিয়র অফিসারদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।