ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ শত বছরের পুরনো একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সফলভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছে। আইন-শৃঙ্খলাজনিত যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে।
আইজিপি আজ সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রি.) সকালে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) এর ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ হাবিবুর রহমান, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ আব্দুল বাতেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ, রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের ডিআইজি বাসুদেব বণিক, র্যাব-১৩ এর কমাড্যান্ট কমান্ডার আরাফাত ইসলাম, রংপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মোবাশ্বের হাসান, পুলিশ সুপার মোঃ ফেরদৌস আলী চৌধুরী, রংপুর কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি ও রংপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সুধী সমাবেশে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ, উচ্চ পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাগণ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, নগরীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, কমিউনিটি পুলিশের সদস্যগণসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, কেউ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে তা মোকাবেলার প্রস্তুতি রয়েছে পুলিশের ।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, নির্বাচনকালে পুলিশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে দায়িত্ব পালন করে থাকে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশন যে দায়িত্ব প্রদান করবে তা পালন করতে প্রস্তুত পুলিশ।
সুধী সমাবেশে আইজিপি বলেন, একটা সময় দেশ ছিল জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের জনপদ। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর 'জিরো টলারেন্স' নীতির আলোকে পুলিশ সকলকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দায়িত্ব পালন করে জঙ্গি দমনে সফল হয়েছে। দেশে একটি স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলেই দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি হয়েছে। মানুষের আর্থিক সামর্থ্য বেড়েছে, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে।
আইজিপি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের আভিযানিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তিনি মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে এগিয়ে আসার জন্য সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরে একটি তথ্যবহুল ডকুমেন্টারি প্রর্দশন করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে আইজিপি অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে একটি কেক কাটেন। এ উপলক্ষে 'মাদুলা' নামে একটি নান্দনিক স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এর আগে আইজিপি বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে বর্ণিল শোভাযাত্রাসহ একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের যাত্রা সূচিত হয়। ছয়টি থানা নিয়ে গঠিত রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের আয়তন ২৪০ বর্গ কিলোমিটার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ আধুনিক ও জনমুখী পুলিশি সেবা প্রদানের মাধ্যমে নগরবাসীর আস্থা অর্জনে নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে সকালে আইজিপি রংপুর শহরে বঙ্গবন্ধু চত্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে তিনি পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে আরপিএমপি'র 'ডিজিটাল অপস রুম' এবং 'হ্যালো আরপিএমপি' অ্যাপস উদ্বোধন করেন।
সবশেষে আইজিপি রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত 'স্বাধীনতা ভবন' উদ্বোধন করেন। তিনি পুলিশ লাইনস চত্বরে একটি গাছের চারা রোপণ করেন। পরে তিনি রংপুর পুলিশ লাইনসে রংপুর বিভাগে কর্মরত বিভিন্ন ইউনিটের ফোর্সের সাথে বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তিনি রংপুর বিভাগের বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত অফিসারদের সাথে মতবিনিময় করেন।