জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কোর “মেমোরি অব দ্য’ ওয়াল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রার” এ অর্ন্তভুক্তির মাধ্যমে” বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের’ র” স্বীকৃতি লাভ করায় এ অসামান্য অর্জনকে যথাযোগ্যভাবে পালনের লক্ষ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আনন্দ শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পূষ্পার্ঘ্য অর্পণ এর মধ্য অনুষ্ঠানে শুভ সুচনা করা হয়। পরে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের গুরুত্বপুর্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
জেলা প্রশাসক ও জেলার বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।
এসময় এমপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়া বাঙালী জাতির জন্য বিশাল গৌরবের। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিশ্ব। বাঙালির বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতার এই ভাষণের দিক-নির্দেশনাই ছিল সে সময়ের বজ্রকঠিন জাতীয় ঐক্যের মূলমন্ত্র।
আজ ৪৫ বছর পরেও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আবেদন বাঙালির কাছে অটুট আছে। লেখক ও ইতিহাসবিদ জেকব এফ ফিল্ড’-এর বিশ্বসেরা ভাষণ নিয়ে লেখা গ্রন্থে এই ভাষণ স্থান পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ববাসীর কাছে বিশেষ করে বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের কাছে আলোর দিশারীতে পরিণত হয়েছে। তিনি এ ভাষণ দিয়েছিলেন ঔপনিবেশিক পাকিস্থানী দুঃশাসন থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য। ১৯৪৮ সালে ভাষার দাবিতে আন্দোলন শুরু করার সময়ই বঙ্গবন্ধু বুঝে গিয়েছিলেন স্বাধীনতা ব্যতীত এই জাতির চূড়ান্ত মুক্তি মিলবে না।
তিনি আরো বলেন, রেসকোর্সের জনসমুদ্রে দেওয়া জাতির পিতার এই কালজয়ী ভাষণে ধ্বনিত হয়েছিল বাংলার গণমানুষের প্রাণের দাবি। এ প্রেক্ষাপটে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে এক জনসভার ডাক দেন। সেদিনের জনসমুদ্রে তিনি বজ্রকন্ঠে ঘোষণা দেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।’ বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণই ছিল প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা। এই ভাষণে তিনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য ঐক্যবদ্ধ করেন এবং আবারও সংগ্রামের দিক-নিদের্শনাও দিয়ে যান।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আলতাফ হোসেন পিপিএম, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এন.এম মঈনুল ইসলাম, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজেরঅধ্যক্ষ প্রফেসর বিশ^াস সুদেব কুমার, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কাজী হাবিবুর রহমান, এনএসআই’র সাতক্ষীরা উপ-পরিচালক মোজাম্মেল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুল হান্নান, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ, সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, আব্দুল করিম বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন খান লিপি, এন.এসআই’র সাতক্ষীরা সহকারী পরিচালক আনিসুজ্জামান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোশারফ হোসেন মশু, জেলা ডেপুটি কমান্ডার মো. আবু বক্কর সিদ্দীক, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস.এম শওকত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাজান আলী, সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাদাৎ হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নূর হোসেন সজল, জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম ছায়েদুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম, দৈনিক আজকের সাতক্ষীরার সম্পাদক মহসিন হোসেন বাবলু, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা পৌর কাউন্সিলর জ্যোৎন্সা আরা, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. হাসানুল ইসলাম, সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিটিউটের অধ্যক্ষ জি.এম আজিজুর রহমান, সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস.এম আব্দুল্লাহ আল-মামুন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, জেলা শ্রমিক লীগ নেতা শেখ তহিদুর রহমান ডাবলু, পৌর কাউন্সিলর ফারহা দিবা খান সাথি, সাতক্ষীরা নবারুণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আমিনুর রহমান উল্লাস, জেলা সাংস্কৃতিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হেনরী সরদার, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সদস্য সচিব শেখ মুশফিকুর রহমান মিল্টন, কণ্ঠশিল্পী মনজুরুল হক, আবু আফফান রোজ বাবু, শামীমা পারভীন রতœা প্রমুখ। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সর্বস্তরের জনগণ, বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার, বর্ডার গার্ড বাহিনীর বর্ণাঢ্য বাদক দল ও শিশু কিশোরদের সমন্বয়ে আনন্দ শোভাযাত্রায় হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকাল ১০টায় আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক, ঐদিন একই স্থানে বেলা ১১টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যায় চলচ্চিত্র প্রদর্শন (ওরা ১১জন), সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহে ৭ই মার্চের ভাষণের উপর রচনা প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
সূত্রঃ (ডেইলি সাতক্ষীরা ডট.কম)