সরকারের সর্বত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কঠোর মনোভাব প্রদর্শন এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জনে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ার কোনও বিকল্প নেই। আমলাতন্ত্র শক্তিশালী হলে বিভিন্ন সেবা পেতে সাধারণ মানুষের কষ্ট হয় বটে, কিন্তু এতে দুর্নীতির সুযোগ কম থাকে। স্থানীয় প্রশাসনকে জনমুখী করার লক্ষ্যে আমলাতন্ত্রের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতাবান করার সরকারি উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা লক্ষণীয়। এসব দিক বিবেচনায় নতুন বছরের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেলা প্রশাসক সম্মেলন। ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যদি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেক্ষেত্রে এবারের ডিসি সম্মেলনই হবে বর্তমান সরকারের শেষ ডিসি সম্মেলন। এদিক বিবেচনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সরকার সংশ্লিষ্টরা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন আয়োজনে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের কার্য-অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. কবির বিন আনোয়ার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মাঠ প্রশাসনের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা ডিসিদের নিয়ে প্রতিবছরই সম্মেলনের আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবারের মতো এবারও সরকারপ্রধান হিসেবে ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৪ জানুয়ারি সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করবেন তিনি। এরপর মন্ত্রণালয়-বিভাগভিত্তিক কার্য-অধিবেশনগুলো রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবারও রাষ্ট্রপতি, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ডিসিরা সাক্ষাৎ করবেন। তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গেও সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
দেশের ৬৪ জেলার ডিসি ও আট বিভাগীয় কমিশনার এই সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে মাঠ প্রশাসনের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করবেন। সরকার ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা তাদের আলোচনা ও দাবি-দাওয়ার কথা শুনে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন। এবারও রাষ্ট্রপতি, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জেলা প্রশাসকরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গেও সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
উল্লেখ্য, প্রতিবছরই ঘটা করে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত ও তা সমাধানে সুপারিশ উত্থাপনের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছাড়াও এবারের সম্মেলনে বিভিন্ন পর্যায়ের নীতিনির্ধারকরা জেলা প্রশাসকদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেবেন। এগুলো তাদের স্থানীয় প্রশাসন চালাতে সাহায্য করবে, এতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে প্রশ্ন উঠেছে ডিসি সম্মেলনে উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার জানিয়েছেন, জেলায় সরকারের মুখপাত্র জেলা প্রশাসকরাই মুখ্য দায়িত্ব পালন করেন। সেক্ষেত্রে ডিসিদের এই বৈঠক সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় নির্বাচনের আগে এবারের ডিসি সম্মেলনে সরকারের পরিকল্পনা বা ইশতেহার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে বিশ্বাস করি।