মাহফিজুল ইসলাম আককাজ: মহান ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরাতে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়েছে। সোমবার (১২ আগস্ট) সকালে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের আমেজে সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরায় পবিত্র ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদের নামাজ আদায় ও পশু কুরবানির মধ্য দিয়ে পালন করেছে ধর্মীয় দ্বিতীয় বৃহত্তম এ উৎসব। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে মুসলিমরা তাদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা উদযাপন করে। ঘরে ঘরে ত্যাগের আনন্দে মহিমান্বিত হয়েছে মন। হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শ্যের প্রতিকী নিদর্শন হিসেবে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর আগে থেকে শুরু হয় কোরবানির এই প্রচলন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তার প্রাণপ্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানী করতে উদ্যত হয়েছিলেন। সে সময় আল্লাহ্ পাক বেহেস্ত থেকে একটি দুম্বা ঐ একই কোরবানী করান। ঐ পরীক্ষায় হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ মহান আল্লাহ তায়ালা খুশি হয়ে যান। ওই অনন্য ঘটনার স্মরণেই ঈদুল আজহায় পশু কোরবানির এ রেওয়াজ চালু হয়। মহান আল্লাহ পাকের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ, তার সন্তুষ্টি অর্জন এবং তারই রাস্তায় সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এ ঐতিহাসিক ঘটনার ধারাবাহিকতায় মুসলিম বিশ্বে কোরবানী ও ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়ে আসছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদ-উল আযহার ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাত পরিচালনা করেন হাফেজ ক্বারী মাওলানা মো. আব্দুল খালেক। কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জামাতে অংশ নেন, সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল, সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বদিউজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এম.এম মাহমুদুর রহমান, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কমিটির সহ-সভাপতি শেখ নিজাম উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নাজমুল হক বকুল, দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা পত্রিকার সহ-সম্পাদক শেখ তহিদুর রহমান ডাবলু, এনডিসি দেওয়ান আকরামুল হক, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান, হাফেজ মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম জিয়া, হাফেজ ইব্রাহিম খলিলসহ রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, সরকারি ঊচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ সাধারণ মানুষ। নামাজের পূর্বে বক্তব্যে সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, ‘আমরা আজকে ত্যাগের মহিমা নিয়ে এখানে একত্রিত হয়েছি। এ দিনটি ত্যাগের দিন। ত্যাগের যে মহিমা আমাদের স্পর্শ করে আমরা যেন সারা জীবন সেটি লালন ও ধারণ করতে পারি। এসময় তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সবাই নিজ নিজ এলাকা ও বাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যেন কোনভাবে এডিস মশার প্রকোপ না বাড়ে। কোরবানির পর যে বজ্য থাকে সেটি সেখানে সেখানে না ফেলার জন্য অনুরোধ জানান।’ জামাত শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সুখ ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নামাজের দোয়া শেষে মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি সকল পর্যায়ের মানুষের মানুষের সাথে কোলাকুলি ও কুশল বিনিময় করেন। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বৃষ্টির কারনে অধিকাংশ স্থানে স্থানীয় মসজিদে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন মুসুল্লীবৃন্দ। এছাড়া শহরের বাইরে বিভিন্ন স্থানেও ঈদের জামাত শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হয় পবিত্র ঈদ উল আযহার জামাত। এদিকে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা কর্মীরা সকল স্তরের মানুষের সাথে মিলিত হন পুলিশ লাইন চত্বরে। সেখানে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে জেলা পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান সকল পর্যায়ের মানুষের মানুষের সাথে কোলাকুলি ও কুশল বিনিময় করেন।