বয়সের ভারে ক্লান্ত রইচউদ্দীন। দিনমজুরের কাজ করতে করতে কোমর আর পায়ে ব্যথা। তবুও কাজ না করলে জ্বলবে না বাড়ির চুলা। ৭২বছর বয়সেও প্রতিবন্ধী সন্তানসহ ৫জন মানুষের খাবার জোগাতে ভোর হলেই ছুটতে হয় কাজের সন্ধানে। যেখানে পারিশ্রমিক ৫শত টাকা সেখানে বয়সের ভারে রইচছদ্দীন পান ১শত টাকা। এভাবে নিজ কষ্টের সাংবাদিকদের সাথে বলেন নেবাখালি গ্রামের নেজামদ্দীন সরদারের ছেলে রইচছদ্দীন সরদার। পরবর্তীতে এসংক্রান্ত একটি সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় গুরুত্বের সাথে প্রকাশ পেলে গত ২১ নভেম্বর রইচছদ্দীনকে নতুন ঘরসহ তার ছেলেদের আয়ের উৎস হিসেবে ভ্যান দেওয়ার কথা জানান সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল।
অবশেষে দেওয়া কথাও রাখলেন তিনি। রবিবার (৮ই নভেম্বর) বিকালে খানপুর এলাকায় অবস্থিত রইচছদ্দীনের জরাজীর্ণ বসতবাড়িতে যান তিনি এবং পাশ্ববর্তী নেবাখালি এলাকায় রইচছদ্দীন সরদারকে দেওয়া ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের বাসস্থান ঘর নির্মাণ কাজের মূল নকশার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধন করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাশীষ চৌধুরী, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ইয়ারুল হক, দৈনিক পত্রদূতের সাংবাদিক নাজমুল শাহাদাৎ জাকির, সরদার আবু সাঈদ, শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, ইউপি সদস্য ইব্রাহীম খলিল প্রমুখ।
এসময় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশের কোন মানুষ গৃহহীন থাকবেনা বলে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এরই অংশ হিসেবে দিনমজুর রইচউদ্দীনকে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি মানসম্মত ঘর নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। এসময় তিনি বলেন, যেসমস্ত পরিবার ভূমিহীন, সরকারি জায়গায় বসবাস করে এবং জমি জায়গা নেই তাদেরকে ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের বাসস্থান’ এর আওতায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১শত ঘরসহ জেলার ৮শত পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরুপ নতুন ঘর দেওয়া হবে।
তবে রইচছদ্দীন সরদারের জমি থাকলেও পরিবারটি অত্যন্ত দারিদ্র। একারণে তারা যেনো ঘর থেকে বঞ্চিত না হন সেকারনে জেলা প্রশাসকসহ এনডিসি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় রইচছদ্দীনের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। শেষ বয়সে যেনো বৃদ্ধ মানুষটি পরিবার নিয়ে ভালোভাবে থাকতে পারেন সেজন্যই এ উদ্যোগ বলে জানান তিনি।
এসময় দিনমজুর রইচউদ্দীন সরদার বলেন, ‘আমি ডিসি স্যারের উপর খুব খুশি হয়েছি। স্যার আমার কথা শুনেছেন। যেখানে চেয়ারম্যান-মেম্বাররাই কেউ শোনেননি। স্যার আমাকে ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন এবং ভ্যান দেবেন বলে বলেছেন।
Patrodut net.