বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সাংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সাতক্ষীরা-০৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: আ.ফ.ম রুহুল হক এমপি বলেছেন, দেশের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দিতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর।
জননেত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে স্বাস্থ্যখাতে অভাবনীয় উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক রোল মডেল হিসেবে সমাদৃত হয়েছে। বর্তমানে ১৩ হাজার ৮৮২টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধমে সারা দেশের গ্রাম পর্যায়ে সাধারন মানুষের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে এখন ১০৭টি মেডিকেল কলেজ, ৫ হাজার ১৮২টি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক, প্রায় ১০ হাজার ৪০০ ডায়াগনস্টিক সেন্টার,
বিশেষায়িত হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতাল ৪৬টি, ৪২৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৫ লক্ষাধিক স্বাস্থ্যসেবা দানকারী রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের সব প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত জালের মতো বিস্তৃত সেবা কেন্দ্র এবং সেবাদানকারী বাংলাদেশের স্বাস্থ্যকে একটি মজবুত টেকসই কাঠামোর ওপর দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছে। জরুরি এবং অন্তর্বিভাগে লাখ লাখ রোগীর সেবা-শুশ্রুষা দিয়ে আসছে দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ।
শনিবার বেলা ১২টায় দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাসিক সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, রোগ প্রতিরোধ ও নির্মূলে গত এক দশকে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। উচ্ছেদ হয়েছে পোলিও, নির্মূল হয়েছে কালাজ্বর, গোদ রোগ, ধনুষ্টঙ্কার। এছাড়া নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কলেরা।
২০১৪ সালে বাংলাদেশকে পোলিওমুক্ত অঞ্চল ঘোষণা করে সনদ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিজ্ঞার বাস্তবায়ন হিসেবে স্বাস্থ্য খাতেও ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা সকল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক তথ্য জাতীয় স্বাস্থ্য তথ্যভাণ্ডারে জমা করছেন উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে রোগীদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা পাওয়ার সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন’ ১৬২৬৩ সার্বক্ষণিক কল সেন্টারের মাধ্যমে সারা দেশ থেকে যে কোনো মানুষ যে কোনো সময়ে স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য জানতে পারছে। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছে।
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একবিংশ শতাব্দীর ঊষালগ্নে স্বাস্থ্যকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার যে প্রচেষ্টা শুরু হয়, তা গত এক দশকে শতধারায় বিকশিত হয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যকে অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বর্তমান বিশ্বে তা এক মডেল। বর্তমান সরকারের সুদক্ষ পরিচালনায় বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে নিন্মমধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করেছে, যার মূলে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে স্বাস্থ্য খাতে আমাদের অর্জনগুলো।
২০০৯ সালে গ্যাভি এ্যওয়ার্ড এবং ২০১১ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘ কর্তৃক ডিজিটাল হেলথ ফর ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট পুরস্কারে ভূষিত হয়। বর্তমান সরকারের হাত ধরে আমরা আজ সুস্থ জাতি হিসেবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়ে জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছি।
একদিকে যেমন আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর মাধ্যমে মহাকাশে বাংলাদেশের অবস্থান নিশ্চিত করেছি, অন্যদিকে মাতৃমৃত্যুর হার, শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে অর্জন করেছি আন্তর্জাতিক সম্মান। পেয়েছি এমডিজি পুরস্কার, সাউথ সাউথসহ বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার। তাই জননেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বানও জানান সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুহুল হক।
সভায় দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল গনি, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের তত্বাবধায়ক ডাঃ রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) উজ্জল কুমার মৈত্র, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জিএম স্পর্শ, সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন
রতন, দেবহাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল ওহাব, মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ গাজী, সমাজসেবা কর্মকর্তা অধীর কুমার গাইন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল লতিফ, আরএমও বিপ্লব কুমার মন্ডল সহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।