সাতক্ষীরার ঘোনার ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান মোশা কর্তৃক স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার রহিল উদ্দীন ও অনলাইন পত্রিকা দৈনিক সাতক্ষীরার সম্পাদক বরুণ ব্যানার্জির নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন স্থানীয় এলাকাবাসী। এ সময় এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অব্দুল কাদের।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের নির্যাতিত নিপীড়িত নেতাকর্মী। ঘোনার বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান মোশার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। তিনি গত ১৫ নভেম্বর সাতক্ষীরার বিজ্ঞ আমলী ১নং আদালতে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ সরদার রহিল উদ্দীন ও সাংবাদিক বরুণ ব্যানার্জির নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান মোশা আওয়ামীলীগে একজন অনুপ্রবেশকারী ও মহাদুর্নীতি পরায়ণ ব্যক্তি। তাকে দল থেকে বহিষ্কারসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার রহিল উদ্দীন জেলা আওয়ামীলীগের কাছে গত ৩ নভেম্বর এক লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এ অভিযোগের আলোকে অনলাইন পত্রিকা দৈনিক সাতক্ষীরায় একটি তথ্যভিত্তিক রিপোর্ট প্রকাশ হয়। রিপোর্টটি প্রকাশিত হওয়ার পর তার গাত্রদাহ শুরু হয় এবং তার পৃষ্টপোষকদের কথামত তিনি আদালতে একটি কাল্পনিক মামলা করেন। আমরা অবিলম্বে এ কথিত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই অন্যথায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতা কর্মিরা উপজেলা, জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি দিয়ে এই অবাঞ্ছিত চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা হবে। চেয়ারম্যান মোশা একজন অনুপ্রবেশকারী ব্যক্তি। সে জামায়াত পরিবারের সদস্য। তার বাবা পিস কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে সে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান মোশা ২০০২ সালে রাজাকার খালেক মন্ডলের হাতে ঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে লিখিত অঙ্গিকারনামার মাধ্যমে জামায়াত ইসলামীতে যোগদান করেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন।
তিনি গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগের বেশকিছু নেতার সহযোগিতায় নৌকা প্রতীক পান এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা মামলা, নির্যাতন, নিপড়িনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি গত ২০১৭সালের ৩১ মার্চ তার সৃষ্টি “দা” বাহিনী দিয়ে বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রহিল উদ্দীনের বাড়িতে হামলা করেন এবং সাধারণ সম্পাদক আবুবকর ছিদ্দিক, ঘোনা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইউনুছ আলী ও তার বৃদ্ধপিতা আব্দুল করিমকে পিটিয়ে কুপিয়ে জখম করেন।
এঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক বাদি হয়ে চেয়ারম্যান মোশা ও তার বাহীনির সদস্যদের নামে থানায় একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ স্থানীয় ঘোনা বাজারে এক প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যান মোশাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যান মোশার একজন চিহ্নিত চোরাচালানি। ঘোনা এবং গাজিপুর সীমান্তে রয়েছে তার দুটি চোরাঘাট ও দুটি গরুর খাটাল। গত ১০ বছরে তিনি শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন। অথচ পৈত্রিক সুত্রে তিনি পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে ৬ বিঘা জমি। আর বর্তমানে তিনি ৫০ বিঘা জমির মালিক। এছাড়া দাঁদভাঙ্গা বিলে সরকারি ২০০বিঘা খাসজমি জোর পূর্বক দখল করে সেখানে তিনি মাছ চাষ করছেন। শহরের মধুমোল্যার ডাঙ্গিতে পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেছেন কয়েক কোটি টাকা দিয়ে। বাঁশদহ শহিদ সৃম্মিতি কলেজে শিক্ষকতা করে সেখানে তিনি দূনিতীর মাধ্যমে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ঝাড়ু মিছিলও করেছেন। এ ঘটনায় কলেজটির প্রতিষ্ঠাতার ভাই আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন ট্রাব্যুনালে একটি মামলাও করেছেন। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
এমতাবস্থায় স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে আব্দুল কাদের ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে চেয়ারম্যান মোশার দায়ের করা মিথ্যা ও হয়রানিমুলক মামলাটি প্রত্যাহারসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, দূর্গাপদ বিশ্বাস, আওয়ামীলীগ নেতা রহিম উদ্দীন, শহিদুল ইসলাম, শাহিনুজ্জামান ডালিম, রুহুল আমিন, মাষ্টার আছির উদ্দীন, ঘোনা ইউপি সদস্য ভৈরব ঘোষ, আব্দুল করিম ও মোত্তাসিন বিল্লাহসহ স্থানীয় দুই শতাধিক এলাকাবাসী।
- প্রেস বিজ্ঞপ্তি।।