অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, আমি আজ সন্তুষ্ট এই কারণে নয় যে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে বড় কিছু ঘটে গেছে, বরং সন্তুষ্ট এই কারণে যে আমাদের এখন একটি বৃহত্তর শিক্ষা পরিবার গড়ে উঠেছে। প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে শুধু মন্ত্রণালয় নয়-উপজেলা ও জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সাংবাদিকসহ অনেকে যুক্ত আছেন। তাঁরা সবাই আমাদের বৃহত্তর পরিবারের অংশ। আমরা যেন এই পরিবারকে ভুলে না যাই।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের ভূমিকায় গুরুত্ব দিয়ে অধ্যাপক রায় পোদ্দার বলেন, আমি ঘরের মধ্যে কথা বললাম, মানুষ জানবে কীভাবে? সাংবাদিকদের মাধ্যমেই জানবে। জনমত তৈরির জন্য তাঁদের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন। আমি নির্দেশ দিয়েছি, প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে যেকোনো সংবাদ-প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক বা সোশ্যাল মিডিয়া-আমাকে পাঠাতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের জীবনে আশা ও হতাশা দুটোই আছে। অনেক প্রস্তাব বাস্তবায়ন সহজ নয়, এই বাস্তবতাই হতাশার বিষয়। যেমন-আমাদের বড় সমস্যা ‘ওভার সেন্ট্রালাইজেশন’। অনেক সিদ্ধান্ত নিচের পর্যায়ে দ্রুত নেওয়া যায় না।
নদীভাঙন ও দুর্গম অঞ্চলের স্কুল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নদীভাঙন এলাকায় মেকশিফট স্কুল করা দরকার। সুন্দর সুন্দর স্কুল বিল্ডিং নদীর তলে যাচ্ছে, তাই বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বৃত্তি পরীক্ষার প্রসঙ্গে অধ্যাপক রায় পোদ্দার বলেন, বৃত্তি দেওয়ার উদ্যোগ আমাদের নয়, এটা এসেছে অভিভাবকদের অনুরোধে। কারণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যারা পড়ে, তারা নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। কিন্তু বৃত্তি পরীক্ষার উদ্যোগের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।
দুর্গম অঞ্চলের শিক্ষকদের ভাতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে প্রজ্ঞাপনে স্থানীয় শিক্ষকরা ভাতা পেতেন না। আমি লড়াই করে সেটি পরিবর্তন করেছি। এখন আমরা দুর্গম অঞ্চলের জন্য আলাদা ভাতার উদ্যোগ নিচ্ছি।
সভায় জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ-এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা এবং সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম ও সাবেক সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপ্পিসহ শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও অংশীজন। সভায় শিক্ষকদের নৈতিক, ব্যবহারিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রম বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।