‘সমবায় ভিত্তিক সমাজ গড়ি, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় খুলনায় আজ (রবিবার) ৪৭তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপিত হয়।
দিনটি উদযাপন উপলক্ষে খুলনা সমবায় বিভাগ ও জেলা সমবায় ইউনিয়ন যৌথভাবে আজ সকালে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। খুলনা অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মূলমন্ত্র সমবায় ভিত্তিক সমাজ গঠন। বঙ্গবন্ধু এই সত্যটি উপলব্ধি করে দেশ স্বাধীনের পরপরই প্রতিটি উন্নয়ন কর্মকান্ড সমবায়ের ভিত্তিতে পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দশ উদ্যোগ গ্রামাঞ্চলে দরিদ্রের হার কমাতে অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। শহর ও গ্রামের মধ্যে বৈষম্য দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। বিগত দশ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। এভাবে প্রতিটি গ্রামকে যদি আমরা সমবায়ের ভিত্তিতে গড়ে তুলতে পারি তাহলে অচিরেই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
সভায় জানানো হয়, খুলনা বিভাগে গত তিন বছরে সমবায় বিভাগের মাধ্যমে ১৮হাজার ৮৭১ জন সমবায়ীকে আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মৎস্য চাষ, গবাদী পশু পালন, মোবাইল সার্ভিসিংসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণ। এসকল প্রশিক্ষণ এবং ঋণ বিতরণের মাধ্যমে ২২২৭২ জনের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সভায় আরো জানানো হয়, খুলনা বিভাগে প্রায় ১৩ হাজার নিবন্ধিত সমবায় সমিতি রয়েছে যেগুলোর কার্যকারী মূলধন প্রায় ৬৯৭ কোটি টাকা। খুলনা বিভাগে মোট ১১৬টি মিল্ক ভিটাভুক্ত সমিতি রয়েছে এবং দুগ্ধ প্রকল্পের আওতায় এক হাজার ১৭৬টি পরিবারকে প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি টাকা গাভী ক্রয় বাবদ ঋণ দেয়া হয়েছে। ১৬২টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩ হাজার ২১২টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে যাদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে সমবায় বিভাগের মাধ্যমে প্রায় ১১ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জিয়াউর রহমান, জেলা সমবায় অফিসার ফরহানা আফরোজ ও জেলা সমবায় ইউনিয়নের সম্পাদক মো. হেমায়েত হোসেন। স্বাগত বক্তৃতা করেন বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের যুগ্ম নিবন্ধক মো. খায়রুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ইয়াকুব আলী খান পলাশ।
অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতি ও শ্রেষ্ঠ সমবায়ীদের মধ্যে ক্রেস্ট ও স্বর্ণপদক বিতরণ করা হয়। এর আগে নগরীর শহীদ হাদিস পার্ক থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি শহর প্রদক্ষিণ করে অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।