লাল-সবুজের বাংলাদেশ যেন আর পিছন ফিরে না যায়। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো মর্যাদার সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে ত্রিশ লাখ শহীদের বাংলাদেশ। থাকবে না সোনার বাংলা গড়ার ব্যর্থতা। এমন প্রত্যাশায় সারাদেশের মতো রংপুরেও উদযাপিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস। শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ আর বিনম্র শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় বাংলার স্বাধীনতা অর্জনে জীবন উৎস্বর্গকারী বীর সন্তানের স্মরণে রয়েছে নানান আয়োজন। দিবসের প্রথম প্রহরে (১৬ ডিসেম্বর) রংপুর মহানগরীর মডার্ণ মোড়ে স্বাধীনতার স্মৃতিস্তম্ভ ‘অর্জন’ এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিভাগীয় প্রশাসন, বাংলাদেশ পুলিশের রংপুর রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকার-বেসরকারি রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংষ্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন।
রোববার ভোরে অর্জন চত্ত্বরে বিজয় তোপ ধ্বনি ও এক মিনিটের নিরবতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার জয়নুল বারী, পুলিশের রংপুর রেঞ্জ ডিআইজ দেবদাস ভট্টাচার্য্য, র্যাব-১৩’র অধিনায়ক মোজাম্মেল হক, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদ, জেলা প্রশাসক এনামুল হাবীব, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও সংগঠন প্রতিনিধিরা।
এসময় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের ঢলে উঠে আসে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে সমর্থন দেয়ার অভিপ্রায়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে আখড়ে ধরে সকল মতভেদ ভুলে রাজনৈতিক সম্প্রীতি এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ হোক মুক্তির বিজয়। এসময় সাধারণ মানুষরা ‘লাল-সবুজের বাংলাদেশ যেন আর পিছন ফিরে না যায়’ এমন দাবি জানান। এদিকে একই সময়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নেতৃত্বে সিটির কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, জাসদ, বাসদ, কমিউনিস্ট পার্টিসহ সাংবাদিকদের
সংগঠন রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন রংপুর জেলা কমিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের
সহযোগি অঙ্গসংগঠন ছাড়ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। এছাড়া রোববার রাত ১২টা এক মিনিটে রংপুর সদর উপজেলা পরিষদে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান চেয়ারম্যান নাসিমা জামান ববিসহ পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এদিকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে শহীদ মিনার ফুলে ফুলে ভরে উঠে।
শ্রদ্ধা জানাতে বাড়তে থাকে মানুষের ঢল। বিজয় দিবস উপলক্ষে সকাল নয়টায় রংপুর স্টেডিয়ামে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর, স্কাউট, গালর্স গাইডসহ বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও রংপুর মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পতাকা উত্তোলন, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, ক্রীড়া ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজন ছিল।