ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর 'রূপকল্প-২০৪১' বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশ পুলিশকেও উন্নত দেশের উপযোগী আধুনিক পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
পুলিশের আধুনিকায়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশে সর্বাধুনিক টেকটিক্যাল বেল্ট, বডি ওর্ণ ক্যামেরা ইত্যাদি যুক্ত হয়েছে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে এবং জনগণকে উন্নত সেবা দেয়ার লক্ষ্যে আগামীতে পুলিশের আধুনিকায়নে যা যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে।
আইজিপি আজ (২৩ মার্চ ২০২২) সকালে যশোর পুলিশ লাইন্সে খুলনা রেঞ্জের সকল পুলিশ ইউনিটের বিভিন্ন পদবির অফিসার ও ফোর্সের সাথে এক বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খ. মহিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যশোর জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার।
পুলিশের নিয়োগ পদ্ধতির সংস্কারের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর পর পুলিশের কনস্টেবল, সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে বিদ্যমান নিয়োগ বিধি সংস্কার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কনস্টেবল পদে জব মার্কেট থেকে 'বেস্ট অব দি বেস্ট' প্রার্থী নিয়োগ করা হয়েছে। সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
আইজিপি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে কোন ক্রিমিনালের স্থান নেই। ক্রিমিনালের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী, নিজেরা ক্রাইম করার জন্য নয়। তিনি বলেন, আমরা নিজে ক্রাইম করবো না, সিনিয়র, জুনিয়র কোন সহকর্মীকে ক্রাইম করতে দিবো না। কোন পুলিশ সদস্য ক্রাইমের সাথে যুক্ত থাকলে তাকে পুলিশ বাহিনী থেকে বের করে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
মানুষের সাথে অমানবিক ও অপেশাদার আচরণ না করার জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়ে আইজিপি বলেন, মানুষের সাথে অপেশাদার আচরণ করা যাবে না।
করোনাকালে পুলিশের মহাকাব্যিক অবদানের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, করোনা মোকাবেলায় পুলিশ কখনও এক মুহূর্তের জন্যও দায়িত্ব পালনে পিছপা হয়নি। তিনি বলেন, প্রথমদিকে পুলিশের সুরক্ষা সামগ্রী ছিল না, পিপিই ছিল না, তবুও পুলিশ দেশ ও জনগণের সেবায় প্রথম দিন থেকেই আত্মনিয়োগ করেছে। করোনাকালে দেশমাতৃকার সেবায়, দেশ ও জনগণের জন্য আমাদের ১০৬ জন সহকর্মী আত্মোৎসর্গ করেছেন। ২৭ হাজার পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। নিজেদের দায়িত্বের গণ্ডি পেরিয়ে পুলিশ মানুষকে সেবা দিয়েছে। দেশের ১৮ কোটি মানুষ পুলিশকে ফ্রন্টলাইন ফাইটার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ এখন 'ফ্রন্টলাইন হিরো'
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে প্রথম বুলেট নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে পুলিশ জনগণের আস্থা, ভালবাসা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে। আবার করোনাকালে পুলিশ মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। জনগণের এ বিশ্বাস, আস্থা ধরে রাখা অত্যন্ত কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমাদের সকলকে এ কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। সবাই মিলে পুলিশ বাহিনীর সম্মান বাড়াতে হবে। পুলিশ বাহিনীর সম্মান বাড়লে ব্যক্তিগতভাবে প্রতিটি পুলিশ সদস্যের সম্মান বাড়বে।
আইজিপি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও করোনাকালে দেশ ও জনগণের সেবায় আত্মোৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ও তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
বিশেষ কল্যাণ সভায় এসময় উপস্থিত ছিলেন কেএমপি কমিশনার মো: মাসুদুর রহমান ভুঁইয়া, সাাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, খুলনার এসপি মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান,চুয়াডাঙ্গার এসপি মো:জাহিদুল ইসলাম,বাগেরহাটের এসপি কেএম আরিফুল হক,কুষ্টিয়ার এসপি খাইরুল আলম,ঝিনাইদহের এসপি মুনতাসিরুল ইসলাম সহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার পুলিশ সুপার ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিবৃন্দ
পরে আইজিপি যশোর পুলিশ হাসপাতাল, ইন্সপেক্টর কোয়ার্টার, চৌগাছা, যশোর এবং পুলিশ অফিসার্স মেস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। তিনি যশোর জেলা পুলিশের মাল্টিপারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জিমি, সিটিজেন জার্নালিস্ট, সাতক্ষীরা।
Copyright © 2024 Update Satkhira. All rights reserved.