ঘটনাটি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার। ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করতে উদ্যত হয়েছিলেন এক কলেজ ছাত্রী। কিন্তু তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পাওয়ায় তিনি আর তা করতে পারেননি।কেন মরতে যাচ্ছিলে - পরিবারের সদস্যদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ওই ছাত্রী যা বললেন, তা শুনতে প্রস্তুত ছিলেন না তার পরিবারের কেউ-ই। ছাত্রীটি জানালেন, তিনি কান্দিগাঁও এলাকায় ৪ জন যুবকের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ছাত্রীটির একথা শুনে পরিবারের সদস্যরা তাকে অভয় দিলেন। তার পাশে দাঁড়ালেন। এরপর রাত পৌনে ১২ টার দিকে ভিকটিম ওই ছাত্রীকে নিয়ে থানায় এসে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনা শুনে পুলিশ ত্বরিত আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে। অভিযুক্তদের ধরতে থানা পুলিশের উদ্যোগে গঠন করা হয় কয়েকটি অভিযানিক দল। পুলিশের তদন্ত দক্ষতার সাথে প্রযুক্তির সংযোগ। দ্রুততার সাথে চার আসামীকে টার্গেট করে অভিযান শুরু করে পুলিশ।
দ্রুতই অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে আসামীরা। অবস্থানভেদে পুলিশকেও নিতে হয় ভিন্ন ভিন্ন কৌশল। এরমধ্যেই একটি সূত্র থেকে জানা যায়, আসামী আমিন মোল্লার অবস্থান জাজিরা থানাধীন মঙ্গল মাঝির ঘাটে। দ্রুতই সেখানে ছুটে যায় পুলিশের একটি দল। একটি স্পিডবোট যোগে পালিয়ে ঢাকায় যেতে উদ্যত হয়েছিলেন আসামী আমিন মোল্লা। ধাওয়া করে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তখনো ধরা পড়েনি আরও তিন আসামী। অনেক তথ্য বিশ্লেষণে দুই আসামী হৃদয় সরদার আর মুরাদ মোল্লার অবস্থান জানা যায় ঢাকায়। শ্যামপুর এলাকায় অবস্থান তাদের। পুলিশের অভিযানিক একটি দল চলে যায় শ্যামপুরে। কিন্তু অনেক বড় আর ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ার তাদের সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করা যাচ্ছিল না। চলে রাতভর অভিযান। অবস্থান সুনিশ্চিত করতে নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করে তাদের অবস্থান জানা যায়। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় তাদের।
তখনো আসামী আরিফ সরদারকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। এদিকে ঢাকা থেকে দুই আসামীকে নিয়ে শরীয়তপুরে ফিরছিলো পুলিশের একটি দল। পথিমধ্যে জানা যায়, আরিফ লঞ্চযোগে ঢাকায় পালাতে পারেন। এমন সংবাদ পেয়ে লঞ্চঘাটে অবস্থান নেয় পুলিশের আরেকটি দল। ছদ্মবেশে চলে পুলিশের অভিযান। ধরা পরে আসামি আরিফ। এর মাধ্যমেই ২৬ ঘন্টা ধরে চলা একটি সফল অভিযানের সমাপ্তি ঘটে।
সর্বদাই জনগণের পাশে, বাংলাদেশ পুলিশ।