ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম পুলিশ সদস্যদের অদম্য প্রাণশক্তি ও সৃজনশীল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে জনগণের কাছে পুলিশকে আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আজ বিকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দামপাড়া পুলিশ লাইনসে এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এর সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন নদভী, সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীন আখতার, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরী, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আশরাফ উদ্দিন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহম্মেদ ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শামীম আহসান প্রমুখসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা এবং চট্টগ্রাম নগরীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশকে জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলার নানামুখী পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে জনগণকে সাথে নিয়ে একযোগে কাজ করছি। সারা দেশে বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে। প্রতিমাসে থানায় একবার 'ওপেন হাউজ ডে' আয়োজন করা হয়ে থাকে। সেখানে জনগণ তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করে থাকেন।
তিনি বলেন, আমরা ইনটেলিজেন্স লেড এবং টেকনো বেইজড পুলিশিং জোরদার করেছি। বাংলাদেশ পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখার ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা ২০৪১ সালে উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি।
পুলিশ প্রধান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের অবস্থান 'জিরো টলারেন্স'। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের সাফল্য ইতোমধ্যে দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। মাদক, জঙ্গি, সন্ত্রাস, সাইবার ক্রাইম, ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম, সোশ্যাল মিডিয়া প্রোপাগান্ডা ইত্যাদি অপরাধসমূহ পুলিশ সফলতার সাথে দমন করে আসছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ যে কোন সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্রমাগত দক্ষ হয়ে উঠছে।
করোনাকালে মানবিক পুলিশিংয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, করোনায় মানবতার যখন এক চরম বিপর্যয় ঘটেছিল তখন পুলিশ জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদেরকে সেবা দিয়েছে। আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া, মৃত ব্যক্তির জানাযা-দাফন ও সৎকার, অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণের মতো মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। সিএমপির পুলিশ সদস্যগণও চট্টগ্রামের নগরবাসীকে সেবা দিয়ে তাদের সাথে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। করোনাকালে দেশের কল্যাণ ও জনগণের সেবায় সিএমপির ৬ জন অকুতোভয় পুলিশ সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন।
তিনি বন্দরনগরী চট্টগ্রামের স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য নগরবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
সিএমপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আইজিপি অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে একটি কেক কাটেন।আইজিপি সিএমপির নবনির্মিত কেন্দ্রীয় অস্রাগার, কালুরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ও মনছুরাবাদ পুলিশ লাইনস্থ পুলিশ ব্যারাক উদ্বোধন করেন।