পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ তার নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেছেন, পুলিশ হবে দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত ও জনগণের প্রতি মানবিক। সেই সঙ্গে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়া হবে।
বুধবার ঢাকা রেঞ্জের ১৩ জেলার পুলিশ সুপার ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এসব কথা করেন।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা ও নির্যাতন করার কোনো সুযোগ নেই। জনগণের প্রতি যেকোনো প্রকার নির্দয় আচরণ বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করলে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায়, এ কথা উল্লেখ করে পুলিশ প্রধান বলেন, এর প্রমাণ করোনাকালে পুলিশ পেয়েছে।’
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘যেন কোনো প্রকার দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহন না করতে হয়, সেজন্য বর্তমান সরকার সব সরকারি পেশাজীবীর সুযোগ-সুবিধা ও বেতন- ভাতা অনেক বাড়িয়েছে। তাই, আয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ জীবন-যাপন করতে হবে। পুলিশের কোনো সদস্য দুর্নীতির সাথে যুক্ত থাকতে পারবে না।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘পুলিশের কোনো সদস্য মাদক গ্রহণ করবে না, মাদকের ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকবে না, মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্ক রাখবে না।’
বিট পুলিশিংয়ের ব্যাপকতা ও গুরুত্ব উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সারাদেশকে ছয় হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে। এর ফলে বিট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ওই এলাকার প্রতিটি খানা সম্পর্কে জানতে পারবে, তাদের সমস্যা চিহ্নিত করতে পারবে। ফলে ওই এলাকার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও আইনি সেবা প্রদান করা সহজ হবে।’
বর্তমান কল্যাণ ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে চাকরিরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের আধুনিকায়ন করা হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়ের হাসপাতালগুলো আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। জেলা হাসপাতাল আধুনিকায়নের আওতায় আনা হচ্ছে। আটটি বিভাগে ক্যাডেট কলেজের আদলে উন্নতমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা হবে।’
ড. আহমেদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে ধনী দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করছেন। উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হওয়ার জন্য নিজেদেরকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে হবে। নিজের টার্গেট সেট করতে হবে। অধঃস্তনদেরকে তৈরি করতে হবে। সংগঠনকে ভালোবাসতে হবে, সম্মান নিয়ে চাকরি করতে হবে।’