নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে ‘বিশ্বনন্দিত’ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। এই দেশে পুরুষের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিজেদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নারী পুলিশ সদস্যরাও।
নির্যাতিত নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় তারা যেমন ভূমিকা রাখছেন তেমনি নিজ নিজ যোগ্যতায় নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও যোগ করেছেন নতুন মাত্রা।
পেশাদারিত্বের মাধ্যমেই দেশের সাধারণ নাগরিকের আস্থা অর্জন করায় এসব নারী পুলিশ সদস্যদের প্রশংসা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি ও পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)।
শনিবার (০৯ নভেম্বর) রাতে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ’র ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে ‘ওমেনস লিডারশীপ ইন্সটিটিউট ট্রেনিং’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজেদের বক্তৃতায় মন্ত্রী ও পুলিশ প্রধান তাদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান অতিথি ও পুলিশের আইজি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চীফ অব মিশন জোয়ান ওয়াগনারসহ অন্যান্য অতিথিরাও যেন নারী পুলিশ সদস্যদের প্রশংসায় মেতে উঠেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি প্রশিক্ষণ কোর্সটিকে সময়োপযোগী ও কার্যকর উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশে এ ধরণের প্রশিক্ষণ আয়োজনের জন্য ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘এ প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা নিজ নিজ দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি নেতৃত্ব দানেও আপনাদেরকে দক্ষ করে তুলবে।’
তিনি প্রশিক্ষণে অর্জিত দক্ষতা কাজে লাগানোর জন্য প্রশিক্ষণার্থী নারী পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) নারী পুলিশ সদস্যদের দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রশংসা করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ পুলিশে মাত্র ১৪ জন নারীর অন্তর্ভুক্তি ঘটে।
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে নারী পুলিশ সদস্যরা অপরাধ দমন, অপরাধ উদঘাটন এবং তদন্তের মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পালন করছেন।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়ও নারী পুলিশ সদস্যরা ইতোমধ্যে দক্ষতা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন, বলেন তিনি।
বাংলাদেশ পুলিশের এ সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বলেন, ‘শুধু দেশেই নয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও বাংলাদেশের নারী পুলিশ সদস্যদের নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্ব বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।’
এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান। সভাপতির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র পুলিশ স্টাফ কলেজ হিসেবে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ পেশাদার ও দক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়ার লক্ষ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
পুলিশ স্টাফ কলেজকে এ প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করায় তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
আয়োজকরা জানায়, ৫ দিনব্যাপী এ কোর্সে ইন্দোনেশিয়ার ২ জন, যুক্তরাষ্ট্রের ১ জন, পাকিস্তানের ৬ জন এবং বাংলাদেশের ৩০ জন নারী পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ৩৯ জন অংশগ্রহণ করছেন।