দেশে করোনা মহামারি পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত পাঁচ দিন ধরে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও বেড়েই চলেছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই বিধিনিষেধ। এর সপ্তাহখানেক পর আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা। তবে কিছুটা শিথিল হলেও এবারের ঈদেও বিধিনিষেধ বহাল থাকবে বলে আভাস দিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
সোমবার প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান, এবারের ঈদ যে যেখানে আছে সেখানেই করার ব্যাপারে জোর দেবে সরকার। কোরবানির পশুসহ ঈদের কেনাকাটা অনলাইনে সারার প্রতি উৎসাহিত করা হবে। এছাড়া ঈদে যেন অবাধে মানুষ যাতায়াত না করতে পারে সে ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপের কথা ভাবছে সরকার। তবে সবকিছু পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। অবস্থা বুঝে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ঈদের সময় বিধিনিষেধ থাকবে কি না, সেটা পরিস্থিতি বলে দেবে। চলমান ১৪ দিনের বিধিনিষেধ পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে। তবে কিছু বিধিনিষেধ অবশ্যই থাকবে। কারণ, গত ঈদের সময় বাড়ি যাওয়ার কারণেই সংক্রমণ বেড়েছিল। এবার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হতে পারে যে যেখানে আছেন, সেখানে যেন ঈদ করেন।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যে পরিস্থিতি তাতে আমাদের সংযত হতে হবে। কারণ এবার এমনভাবে ভাইরাস ছড়িয়ে গেছে যে, অবস্থা খুব মারাত্মক। এই ১৪ দিনে কতটুকু আমরা ফল পাবো, সেটা দেখতে হবে। সেটা দেখার বিষয় আছে। কারণ এটা (করোনা সংক্রমণ) একেবারে রুট লেভেল পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। গ্রামের মানুষ তো এত সচেতন নয়। আগে গ্রামে (করোনা সংক্রমণ) ছিল না, ওনারা ঈদে বাড়ি গিয়ে সব ছড়িয়ে দিয়ে এসেছে। এখন যারা মারা যাচ্ছেন তারা ১৪ থেকে ২০ দিনের আগের রোগী।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একটি সুপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে আমরা ঈদের সপ্তাহটি ট্যাকেল করার চেষ্টা করব। আমরা দেখছি কীভাবে কী করা যায়।’
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২০ বা ২১ জুলাই দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ঈদের তারিখ নির্ধারণে আগামী ১১ জুলাই বসবে চাঁদ দেখা কমিটি। তবে ঈদ ২১ জুলাই ধরে সরকারি ছুটি ২০-২২ জুলাই (মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার) তিন দিন ধরা আছে। এই হিসেবে সরকারি ছুটি থাকবে পাঁচ দিন। আর সেই ছুটিতে কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে কি না, সেটি নিয়েও আলোচনা চলছে।
করোনার প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করায় গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। সোমবার বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এই লকডাউনে অফিস-আদালত, গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসার। মাঠে কাজ করছে মোবাইল কোর্ট। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে গেলেই জেল বা জরিমানার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তবে প্রশাসনের কড়াকড়ি সত্ত্বেও মানুষ কারণে-অকারণে বের হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে জনসাধারণের মধ্যে যথেষ্ট গাফিলতি চোখে পড়ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জিমি, সিটিজেন জার্নালিস্ট, সাতক্ষীরা।
Copyright © 2024 Update Satkhira. All rights reserved.