মাগুরায় এ বছর অনেকটাই অনাড়াম্বরে শুরু হয়েছে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ মাগুরার ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা। পূজা উপলক্ষে প্রতিবছর যেখানে লাখো মানুষের ঢল নামে, সেখানে এবার বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে জমকালো আয়োজনের পরিবর্তে সীমিত পরিসরে উদযাপিত হচ্ছে। অনেকটা সাদামাটাভাবে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে পালন করছে স্থানীয় সনাতন ধর্মালম্বীরা। প্রতি বছর এ পূজা উপলক্ষে নানা ধরনের আলোকসজ্জার পাশাপাশি মাসব্যাপী মেলার আয়োজন থাকে, তা এবার হচ্ছে না।
শুক্রবার রাতে ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এ পূজা। ২৪ নভেম্বর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বির্সজনের মধ্যদিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী এ পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
মাগুরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্র জানা গেছে, এ বছর মাগুরা জেলায় মোট ৯৪টি মণ্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে পৌর এলাকায় ১৬টি, সদর উপজেলায় ৩১টি, শ্রীপুরে ১৩টি, মহম্মদপুরে ১১টি ও শালিখায় ২৩টি মণ্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামের নিতাই গৌর গোপাল সেবাশ্রমের পূজাবিষয়ক সম্পাদক তরুণ ভৌমিক জানান, এবারের আয়োজন কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। প্রতিবছর যেখানে ব্যাপক আলোকসজ্জা, মিউজিক সিস্টেম ও মেলা বসে এবার তার কিছুই হচ্ছে না। এই মণ্ডপে অন্য বছর যেখানে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা ব্যয় হয়ে থাকে, এবার সেখানে সব মিলিয়ে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মধ্যে থাকছে।
করোনার প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে মণ্ডপগুলোর প্রতিমার নকশায়ও। শহরের ছানা বাবুর বটতলা পূজা মণ্ডপের প্রতিমা শিল্পী উজ্জ্বল কুমার গুরু জানান, এবারের নকশায় তিনি করোনাভাইরাসের একটি অবয়ব যোগ করেছেন। যেখানে কাত্যায়নী দেবী অসুরের পাশাপাশি করোনাভাইরাসকে বধ করে পৃথিবীর মানুষকে বিপদমুক্ত করবেন।
শহরের নতুন বাজার স্মৃতি সংঘ পূজা মণ্ডপের সাধারণ সম্পাদক প্রণয় ঘোষ বলেন, ‘কাত্যায়নী পূজা মাগুরা জেলার ঐতিহ্য। প্রতিবছর এ উৎসব উপলক্ষে দেশ বিদেশ থেকে লাখো মানুষের ঢল নামে। তবে এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে আত্মীয়-স্বজনদের পূজা দেখতে না আসার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করছি’।
জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জানান, প্রশাসন ও জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে এবার পূজায় মেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজামণ্ডপে প্রতিমা দর্শন শেষে রাত ৯টার মধ্যে স্থান ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া, অন্যবারের মতো আলোকসজ্জা ও সাউন্ড সিস্টেম সীমিত আকারে পরিবেশনের জন্য প্রতিটি পূজামণ্ডপ পরিচালনা কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে’।
পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান জানান, প্রতিবারের মতো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য পুলিশের টহল থাকবে। করোনা পরিস্থিতিতে সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করে ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর থাকবে। পাঁচ দিনব্যাপী এ পূজায় প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও কাজ করবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জিমি, সিটিজেন জার্নালিস্ট, সাতক্ষীরা।
Copyright © 2024 Update Satkhira. All rights reserved.