বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম(বার) বলেছেন, মাদক আমাদের সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। একটি সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে মাদক বড় অন্তরায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশ পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। মাদকের বিরুদ্ধে এ আন্দোলনকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। এ আন্দোলনে নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে হবে দেশের মেধাবী তরুণ সমাজকে।
আইজিপি ০৬ জুলাই ২০১৯ খ্রি. শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এর পিএসসি কনভেনশন হলে বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত সদস্যবৃন্দের কৃতি সন্তানদের ‘মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান ২০১৯’ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) জনাব চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পুনাক সভানেত্রী মিসেস হাবিবা জাবেদ, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ এবং অতিরিক্ত আইজিপি (এএন্ডও) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এআইজি (হেলথ এন্ড এডুকেশন) তাপতুন নাসরীন।
আইজিপি বলেন, একমাত্র শিক্ষার মাধ্যমেই আমরা এগিয়ে যেতে পারি। আমরা সার্টিফিকেট নির্ভর শিক্ষা চাই না। আমরা চাই মানবিক মূল্যবোধ, চারিত্রিক ও নৈতিকতা সম্পন্ন আলোকিত মানুষ, যারা সমাজ ও দেশকে আলোকিত করতে পারবে, যাদের দেখে অন্যরা উৎসাহিত হবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, সন্তানের কাছে বাবা-মা হলেন রোড মডেল। সন্তান পরিবার থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। আপনাদের সন্তানদের খোঁজ-খবর রাখুন। তাদেরকে সময় দিন। তিনি সন্তানদের আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান।
র্যাবের মহাপরিচালক ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, বর্তমানে পুলিশ বাহিনীর পরিধি অনেক রেড়েছে, পুলিশের প্রতি মানুষের প্রত্যাশাও দিন দিন বাড়ছে। এ প্রত্যাশা পূরণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশ সদস্যদের মেধাবী সন্তানদের স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জ্ঞান-বিজ্ঞানে তোমাদেরকে এগিয়ে থাকতে হবে।
ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী মেধাবী সন্তানদের উদ্দেশ্যে বলেন, বর্তমান তথ্য প্রবাহের যুগে সবকিছু উন্মুক্ত। এর মধ্যে যা ভাল তা গ্রহণ করতে হবে। তিনি মোবাইল ফোনের অপব্যবহার না করার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বেগম হাবিবা জাবেদ বলেন, স্বীকৃতি মানুষের জন্য অত্যন্ত আনন্দের । এটা আবার মানুষের মধ্যে অহংকারও তৈরি করে। এক্ষেত্রে সর্তক থাকার জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সন্তানদের ওপর কোন কিছু চাপিয়ে দিবেন না। তাদেরকে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী গড়ে উঠার সুযোগ দিন। তিনি জঙ্গিবাদ ও মাদক থেকে দূরে থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, মেধাবৃত্তি চালুর ফলে পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের মাঝে মেধার চর্চা বাড়বে। এতে অন্যরাও উৎসাহিত হবে, অনুপ্রাণিত হবে।
অনুষ্ঠানে ২০১৮ সালে এইচএসসি/সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ ৫ এবং এ লেভেল পরীক্ষায় ৩টি বিষয়ে অ গ্রেডপ্রাপ্ত ২০১ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষায় ১৯৪ জন, আলিম পরীক্ষায় ৩ জন, কারিগরি শিক্ষায় ২ জন এবং এ লেভেল পরীক্ষায় ২ জন রয়েছে।
আইজিপি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও নগদ অর্থ তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তকর্তাগণ, মেধাবী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বর্তমান আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম(বার) এর ঐকান্তিক আগ্রহে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে গত ২০১৮ সাল থেকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স হতে মেধাবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।