শেখ আরিফুল ইসলাম: জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় খুলনাকে মাদক, সন্ত্রাস, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ও যানজট মুক্ত শহর হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপত্বিতে রবিবার সকালে তাঁর সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন অতিথিরা।
সভায় মাসিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে মহানগরীর আট থানা ও জেলার নয় উপজেলায় ডিসেম্বর মাসে খুন চারটি, ধর্ষণ ছয়টি, অপহরণ দুইটি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১৩টি মামলা দায়ের হয়েছে।
সভায় উপস্থিত খুলনা-২ আসনে নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল বলেন, আমার নির্বাচনী ইশতেহারে মাদক, ভূমিদখল, চাঁদাবাজ এবং ভেজাল খাদ্যদ্রব্যর ব্যাপারে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলাম। আমি সকলের সহযোগিতায় এই ইশতেহার বাস্তবায়ন করবো। খুলনার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুলনার উন্নয়নের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ আনা হবে এবং একটি মাস্টার প্লানের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, বর্তমানে খুলনার মূল সমস্যা যানজট যার পিছনে রয়েছে অবৈধ মাহেন্দ্র, ব্যাটারী চালিত রিক্সা এবং ইজিবাইক। এক সময় এক হাজার আটশত ইজিবাইককে লাইসেন্স দেয়া হলেও এখন সে সংখ্যা ৩০ হতে ৪০ হাজার উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন, আগামী ১৫ জানুয়ারির পর শহরের বাইরে থেকে কোন ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করতে পারবে না।
লাইসেন্স বিহীন অবৈধ এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এনে আগামী দুই মাসের মধ্যে খুলনা থেকে যানজট নিরসনের অঙ্গীকার করেন মেয়র।
কেএমপি কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) সরদার রকিবুল ইসলাম বলেন, পুলিশের কোন সদস্য মাদকের পয়সা গ্রহণ করবে না। মাদক নিয়ে নিরীহ লোককে হয়রানি করা হবে না। স্কুল কলেজের সামনে সকল বিড়ি সিগারেটের দোকান এক সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদ করা হবে। মাদক ও ভূমিদস্যুদের জন্য তদবিরকারীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
সভায় আরও বক্তৃতা করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শেখ সোহেল এবং পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ প্রমুখ।
মহানগরীর আটটি থানায় ডিসেম্বর মাসে চুরি পাঁচটি, খুন তিনটি, ধর্ষণ পাঁচটি, নারী ও শিশু নির্যাতন আটটি, মাদকদ্রব্য ১০৩টি এবং অন্যান্য আইনে ২৫টি সহ মোট ১৪৯টি মামলা দায়ের হয়েছে। গত নভেম্বর মাসে এ সংখ্যা ছিল ২১৯টি।
খুলনা জেলার নয়টি উপজেলায় গত ডিসেম্বর মাসে চুরি একটি, খুন একটি, ধর্ষণ একটি, অপহরণ দুইটি, নারী ও শিশু নির্যাতন পাঁচটি, মাদকদ্রব্য ৬৬টি এবং অন্যান্য ৫৫টিসহ মোট ১২৯টি মামলা দায়ের হয়েছে। গত নভেম্বর মাসে এ সংখ্যা ছিল ১৯৪টি।
সভায় সকল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সকল ইউএনওসহ জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।