রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জীবনমুখী ও মানবকল্যাণে নিবেদিত এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি সফল গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবিত জ্ঞান মানবজাতির অশেষ কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। চিকিৎসাসহ জীবনমান সহজ করতে পারে। এমনকি বিশ্বরাজনীতি, ভূ-অর্থনীতি, বিশ্ববাণিজ্য, আঞ্চলিক বা দেশীয় আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে গবেষণা যাতে আন্তর্জাতিক মানের হয় এবং জীবনমুখী ও মানবকল্যাণে নিবেদিত হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। গবেষণার ফল যাতে লাইব্রেরিতে বন্দি না থেকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে লাগে তা নিশ্চিত করতে হবে।

রোববার বিকেল ৩টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তনে সভাপতির ভাষণে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন।
খুলনা অঞ্চলে রয়েছে জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবন ও সামুদ্রিক সম্পদ সমৃদ্ধ বিশাল উপকূল। রাষ্ট্রপতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এ জীববৈচিত্র্য ও উপকূলীয় মূল্যবান সম্পদ বিষয়ে গবেষণায় অধিক মনোনিবেশের আহ্বান জানান।

আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্য জাতিকে যেমন অনুপ্রাণিত করে, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপ্রত্যাশিত ঘটনা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। শিক্ষক যখন তার মহান আদর্শ থেকে দূরে চলে যান, তখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনসহ গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করে বক্তব্য দেন।
সমাবর্তনে ৪ হাজার ৪৭৮ জনকে স্নাতক, ২ হাজার ৫৩০ জনকে স্নাতকোত্তর, ৫ জনকে এমফিল ও ৮ জনকে পিএইচডি এবং ১৭ জনকে পোস্ট-গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের পরীক্ষার ফলাফলে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ২৩ জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।
লিখিত বক্তৃতার পরে রাষ্ট্রপতি বলেন, গোল্ড মেডেল পাওয়া মেয়েরা যেন গোল্ড মেডেল দিয়ে অলঙ্কার না বানায়। খুলনার মেয়েরা খুব ভালো, দেখতে শুনতে মন্দ নয়। রাষ্ট্রপতি দেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন সদস্য, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আগে রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ‘কালজয়ী মুজিব’ উদ্বোধন করেন।

এর আগে সকালে সার্কিট হাউজ মাঠে হেলিপ্যাডে নামলে খুলনা সিটি কর্পারেশন মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহা আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, কেএমপির কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির , খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড.মহিদ উদ্দিন,খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন ও পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ মহামান্য রাষ্ট্রপতি কে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে স্বাগত জানান।