স্টাফ রিপোর্টার : ২০১৮ সাল সাতক্ষীরা সদর উপজেলার জন্য ছিলো একটি বিশেষ চ্যালিঞ্জিং সাল।কারন ঐ বৎসর ছিলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এই চ্যালিঞ্জিং সাল কে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছিলেন সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান।থানায় ডিজি করতে টাকা লাগেনা, মামলা করতে টাকা লাগেনা এসব সাইটবোর্ড টানিয়ে রেখে তিনি মানুষ কে পুলিশিং সেবা নিতে প্রণোদনা দিতেন।তিনি নারী শিশু ও প্রতিবন্ধীদের বিশেষ সেবা দেওয়ার লক্ষে থানায় নারী শিশু হেল্প ডেক্স স্থাপন করেছেন। সেখানে নারী শিশুদের বিশেষ যত্ন সহকারে সেবা দেওয়া হয়।
তিনি সব সময় তার সাব-ইন্সপেক্টর দের বলতেন থানায় আসে মানুষ বিপদে পড়ে, তাই মানুষ যেনো তার কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়।তিনি অসৎ পুলিশ সদস্যদের উদ্যেশ্যে বলতেন গরীরের পেটে লাথি মেরে জুলুম করে যে দারোগা ঘুষ খাবে আমার থানায় তার চাকুরী করার অধিকার নেই।
সাতক্ষীরা থানায় যোগদানের পর থেকেই তিনি মাদক-জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষনা করেই অভিযানে নেমেছিলেন।অভিযানে দিনের পর দিন উদ্ধার হয় হিউজ পরিমানে ফেন্সিডিল, গাঁজা, ইয়াবার মত ভয়ংকর নেশা দ্রব্য।আটক করা হয় বড় মাপের মাদক ব্যবসায়ীদের।মাদকের মত তিনি জঙ্গি ও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে সব সময় ই জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করতেন।গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান অভিযান চালিয়ে জেলা জামাতের আমীর নুরুল হুদা কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।
জাতীয় নির্বাচন কে সামনে রেখে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান সদর উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে একযোগে নাশকতা ঠেকাতে সচেতনতা মুলক প্রচারণা চালিয়েছিলেন।সাথে সাথে ইভিএম পদ্ধতিতে কিভাবে ভোট দিতে হয় সেগুলো ও জনগণ কে শিখিয়ে দিতেন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।
২০১৮ সালের নভেম্বর মাস থেকেই ধরি। নভেম্বর ২০১৮ সালে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভায় জেলায় রেকর্ড ব্রেক মাদক জব্দ, অস্ত্র উদ্ধার,সাজা প্রাপ্ত আসামি আটক করে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান তৎকালীন পুলিশ সুপার জনাব মোঃসাজ্জাদুর রহমান বিপিএম এঁর নিকট থেকে জেলার শ্রেষ্ঠ ওসির পুরুস্কার পেয়েছিলেন।এক ই ভাবে ডিসেম্বর- জানুয়ারী - ফেব্রুয়ারী -মার্চ -এপ্রিল- মে ও জুন মাসে জেলা পুলিশের কল্যাণ সভায় অপরাধ দমনে বিশেষ অবদান রাখায় ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি হিসাবে সন্মাননা ক্রেস্ট পেয়েছিলেন।
পুরুস্কার যে কোন অফিসার পেতে পারেন কিন্তু এক টানা ১৬ মাসে ১৫ বার শ্রেষ্ঠ ওসির সন্মাননা পাওয়া খুব টাফ বিষয় বলে মনে করেন সাধারন জনগন।
জেলায় নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বার যোগদানের পর থেকে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান তার কার্যক্রমের গতি আরো বৃদ্ধি করেন।সম্প্রতি লবণ গুজব নিয়ে সাতক্ষীরার পরিবেশ উত্তপ্ত হলে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম দিন রাত পরিশ্রম করে,গুজব প্রতিরোধে মাইকিং,লিফলেট বিরতণ ও কড়া তৎপরতায় তিন দিনের মধ্যেই গুজব পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
তার আগে সাতক্ষীরা তে ডেঙ্গু রোগের উদদ্রোপ দেখা দিলে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বার এঁর দিকনির্দেশনা মোতাবেক সাতক্ষীরা জেলার ৮ টি থানার পুলিশ একযোগে থানা কস্পাউন্ডে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালায়। এতে সাতক্ষীরা থানা পুলিশের কার্যক্রম ছিলো চোখে পড়ার মতই। এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা মুলক প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণেে সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান এগিয়ে ছিলেন।ফলে নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বার তাকে ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ কয়েকবার মাসিক কল্যাণ সভায় শ্রেষ্ঠ ওসির সন্মাননা ক্রেস্ট দিয়েছেন।
অপরাধ দমনের পাসাপাসি মানবিক পুলিশ হিসাবে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান সাতক্ষীরা শহরে বেশ প্রশংসা অর্জন করে চলেছেন।শহরের স্কুল ছাত্রী চাঁদনী নিহত হলে তার দাফন কাফনের জন্য সাতক্ষীরা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান দশ হাজার টাকা সহযোগিতা করেন। এছাড়া সম্প্রতি এক সংগীত শিল্পীর চিকিৎনায় অনেক আথিক সহযোগিতা করেছেন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।
শহরের সুলতানপুর গ্রাসের এস্কেন বলেন কিছু দিন আগে আমার ছেলের মোবাইল ও মানিব্যাগ হারিয়ে যায়। অনেক খোজা খুজি করে তা পাওয়া যাইনি। এক পর্যায়ে সাতক্ষীরা থানার এএসআই সুমন মানিব্যাগ আর মোবাইল ফোনটি রাস্তায় পেয়ে ওসি সাহেবের মাধ্যমে মানিব্যাগে থাকা ২৫ হাজার টাকা সহ আমার ছেলের মোবাইল টি ফিরিয়ে দেন।আমি সাতক্ষীরা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান স্যার কে ধন্যবাদ জানাই।
পরানদহ গ্রামের মোতালেব মেম্বার প্রতিবেদক কে জানান, আমার ছেলে জিয়ারুল তার বৌ আর শ্বশুরের কথা মোতাবেক আমার ও আমার স্ত্রীর উপর প্রতিনিযত নির্যাতন করতো।আমার ছেলে নড়ে চড়ে আমাকে মারতে আসতো এবং আমার জমির ধান সব কেটে নিয়ে যেতো।আমি কোন উপায় না পেয়ে সাতক্ষীরা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান সাহেবের কাছে লিখিত অভিযোগ দেই। পরে ওসি সাহেব সদর থানার এসআই শরীফ এনামুল কে পাঠিয়ে আমার ছেলে জিয়াউর কে আটক করে থানা হাজতে রাখেন এক রাত। পরে ওসি সাহেব আমার ছেলে কে কাউন্সিলিং করে ছেড়ে দেন। সেখান থেকে আমার ছেলে আর আমার সাথে বেয়াদবী করেনা। আমি ওসি সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকা করি।
তাই উপরোক্ত কার্যক্রম গুলো পর্যালোচনা করলে বোঝায় সাতক্ষীরা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জনবান্ধন পুলিশ অফিসার হিসাবে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।কয়েক মাস আগে ১২ মাসে ১১ বার জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হওয়ায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী তাকে ফুলের শুভেচ্ছা দিয়ে অভিনন্দন জানান।
সাথে সাথে বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান ইন্সপেক্টর জেনারেল ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) এঁর শ্লোগান..... "মুজিববর্ষের অঙ্গিকার, পুলিশ হবে জনতার" এটি বাস্তবায়নে কাজ করে যাবেন বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।