♣♣♣♣
মানুষ তৈরির কারিগর ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল
হাবিবুর রহমান। ডিআইজি (প্রশাসন-ডিসিপ্লিন), পুলিশ হেড কোয়াটার্স ঢাকা ও চেয়ারম্যান, উত্তরণ ফাউন্ডেশন,বাংলাদেশ।তিনি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একজন উজ্জল নক্ষত্র।মহান মুক্তি যুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের অবদান নিয়ে তিনি একটি বই লিখেছিলেন-মুক্তি যুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ নামে।বইটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে বাংলাদেশের মানুষের কাছে।সম্প্রতি ঢাকায় রমিজউদ্দিন স্কুলের দুই জন শিক্ষার্থী বাস চাপায় নিহত হওয়ার ঘটনায় নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে ৭-৮ দিন যাবৎ রাজধানীতে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছিল।পরে শিক্ষার্থীদের ৯দফা দাবী-দাওয়া মেনে নিয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী নিহত পরিবার কে ২০ লক্ষ করে টাকা অনুদান দেন ও রমিজউদ্দিন স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য ৫ টি বাস প্রদাণ করেন সেনাবাহিনীর মাধ্যমে।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবী পুরন হওয়ার পরেও তারা রাজধানীতে অবরোধ করে এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাঝে তৃতীয় শক্তি হিসাবে আন্দোলনের নামে রাজধানীর ঝিকাতলায় অরাজকতা সৃষ্টি করে।স্কুল ড্রেস পরে শিক্ষার্থী সেজে শিবিরের ছেলেরা প্রবেশ করে সেখানে এবং অরাজকতা চালানোর চেষ্টা করে।পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।এসময় রাজধানী থেকে একটি চক্র সোশাল মিডিয়াতে গুজব প্রচার করে দেশের মানুষ কে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালায়। পুলিশ পরিস্থিত নিয়ন্ত্রন করতে গেলে শিবির কর্মীরা শিক্ষার্থী সেজে রাজধানী সহ দেশের কিছু কিছু জেলায় সোশাল মিডিয়ায় পুলিশের নামে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পোষ্ট করে ও পুলিশ কে হেউ প্রতিপন্ন করার লক্ষে বিভিন্ন পোষ্টার, ব্যানার লিখে ফেইজবুকের লাইফে সম্প্রচার করে। বাংলাদেশ পুলিশের নামে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও পুলিশকে গালি দেওয়ার বিষয় টি পুলিশ হেড কোয়াটার্স ডিআইজি জনাব মোঃ হাবিবুর রহমান এঁর অদৃষ্টিগোচর হয়।পরে হেড কোয়াটার্স ডিআইজি হাবিব আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্যেশ্যে তাঁর ব্যক্তিগত ফেইজবুক আইডিতে একটি চিঠি লেখেন।চিঠি টি নিচে হুবাহু তুলেধরা হলো।
★★★★★
ছোট্ট বন্ধুরা, হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর শুভেচ্ছা নিও। তোমাদের প্রতি আমার বা আমাদের কোন অভিযোগ, অভিমান নেই। আমি শুধু বলতে চাই কিছু কথা।
তোমরা যারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে, সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ পুলিশের উপর চড়াও হয়েছো। পুলিশকে কটাক্ষ করে অশ্লীল শব্দ চয়ন লেখা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, লিফলেট নিয়ে দাঁড়িয়েছো, যারা সরকারি পুলিশের গাড়িতে মার্কার পেন, কালি দিয়ে বাজে ভাষা লিখেছো তাদের জ্ঞাতার্থে।আমাদের মত তোমাদের পরিবারেরও কোন না কোন পুলিশ সদস্য আছে। আবার আমাদের পরিবারেও তোমাদের মত বয়সী ভাই, বোন, ছেলে, মেয়ে, ভাগ্নি, ভাগ্নে রয়েছে। আমরা তোমাদের শত্রুও না। প্রতিপক্ষও না। আবেগের জন্য, ভুলবশত কিংবা না বুঝে, না জেনে তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছো।
পুলিশ মানেই খারাপ না, পুলিশ মানেই অবিবেচক কেউ না। ছোট্ট বন্ধুরা, মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশবাহিনীর অবদান অবিস্মরণীয়। পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে নিজের জীবন বিপন্ন করে বাংলাদেশ পুলিশ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জনের জন্য প্রতিবাদী হয়েছিল।
আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা। দিনশেষে আমরা মানুষ। আমাদেরও বিবেক রয়েছে। মাঝে মধ্যে আমি নিজেই ভুলে যাই পেশাদারিত্ব মনোভাব। বিবেকের তাগিদে অনেক কিছু করে ফেলি। এতকিছুর উদাহরণ ছোট্ট বন্ধুরা তোমাদেরকে বিশ্লেষণ করে দিতে পারবো না।
ছোট্ট বন্ধুরা, তোমাদের বয়সী অনেকে সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হয়। তোমাদের বাবা-মার নিকট মুক্তিপণ দাবী করে। সেসময় তোমাদের উদ্ধার করার জন্য আমরা যখন মিশনে নামি। তখন কোনভাবেই মনে হয় না তোমরা আমাদের দূরের কেউ। খুব আপনজন মনে হয়। আমরা ব্যর্থ হলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হই তোমাদের কথা ভেবে।
ছোট্ট বন্ধুরা, অনেক সময় অনেক মেধাবী ছেলেমেয়ে টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারে না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে কয়েক জনকে নিজ দায়িত্ব নিয়ে পড়াশোনার সহায়তা করে আসতেছি দীর্ঘদিন যাবৎ।
এই দেশ, এই শহর, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনেক সময় অনেক রাত ঘুমাতে পারি নাই। দায়িত্বের বাইরে অনেকটা দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। আমার মত অসংখ্য এমন পুলিশ কর্মকর্তা জীবনের আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি, অন্য কারো মুখের হাসি উপহার দিতে।
তারপরও যখন তোমরা আমাদের গালি দাও। পরিবার নিয়ে বাজে কথা বলো। আমাদেরও কষ্ট লাগে। তোমরা মেধাবী। তোমরা জাতির ভবিষ্যৎ। একদিন দেশ শাসিত হবে তোমাদের মেধায়। তোমাদের শাণিত মেধা কোন প্রপাগান্ডা, কারো কব্জায় না যাক। সুশিক্ষিত হয়ে, মানুষের মত মানুষ হয়ে দেশ সেবায় এগিয়ে যাও। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, তোমাদের কলম হোক শোষণ মুক্তির হাতিয়ার।
তোমাদের উচিত এখন পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া যেন ভবিষ্যৎ সময়ে তোমাদের মেধা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে আরো উচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে পারে।
♣প্রাসংঙ্গতঃ
মানুষ তৈরির কারিগর ডিআইজি হাবিব
হাবিবুর রহমান। ডিআইজি (প্রশাসন-ডিসিপ্লিন), পুলিশ হেড কোয়াটার্স ঢাকা ও চেয়ারম্যান, উত্তরণ ফাউন্ডেশন,বাংলাদেশ।
উত্তরণ ফাউন্ডেশন। এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
এই সংগঠনের মাধ্যমেই হিজড়া ও বেদে সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে আলো ছড়ানো হচ্ছে। ঢাকার আশুলিয়া, আমিনবাজার ও বি-বাড়িয়ায় হিজড়াদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে তিনটি বিউটি পার্লার। এ পার্লারগুলো নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখাচ্ছে হিজড়াদের। তাদের মূল পেশার (প্রতারণা, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা) বাইরে এনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বেদে সম্প্রদায়ের জন্য বুটিকসহ নানা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলা হয়েছে। তাদের সন্তানদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে শিক্ষালয়। মুন্সীগঞ্জে একটি স্কুলে বেদেদের সন্তানরা লেখাপড়া শিখছে। বেদেপল্লীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এ সম্প্রদায়ের জন্য তৈরি হচ্ছে মিউজিয়াম। আর এসব মানবিক কাজে হাত দিয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন-ডিসিপ্লিন) হাবিবুর রহমান।
তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ও এনজিও এগিয়ে আসছে।