শুক্রবার রাত ৯.১০ মিনিট সাতক্ষীরা শহরের থানা মোড়ের ফলের দোকান। গুড়ি গুড়ি বর্ষা উপেক্ষা করে এক লোক মটর সাইকেল রেখে শাক-সবজি কিনছেন।দোকানে বেশ ভিড় তারপরেও লোকটা লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে সবাই চলে গেলে তিনি সবজি কিনবেন।এসময় প্রতিবেদক যাচ্ছিলেন পাকাপোলের মোড়ে তার বাবার চেম্বারে।থানা মোড়ে এসেই প্রতিবেদকের চোখ পড়লো ঐ সবজির দোকানের ক্রেতার দিকে। প্রতিবেদক সবজির দোকানে গিয়ে দেখতে পেলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জনাব দেবাশীষ চৌধুরী গুড়ি গুড়ি বর্ষা উপেক্ষা করে সবজি কিনছেন।প্রতিবেদক তখন দোকানদার কে বল্লো এই ছেলে আগে ইউএনও সাহেব কে ছেড়ে দেও পরে অন্য ক্রেতাদের দিও। দোকানদার এসময় অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বল্লেন উনি ইউএনও স্যার তা উনার সে লাল রংয়ের পাজেরু কৈ?? ইউএনও স্যার রা তো লাল রংয়ের সরকারি পাজেরু চড়ে রাস্তায় চলাচল করেন। একই প্রশ্ন প্রতিবেদকেরও । এসময় ইউএনও দেবাশীষ চৌধুরী উত্তরে বল্লেন, শুক্রবার সরকারি ছুটি। ড্রাইভার সাহেব হয় তো পারিবারিক কাজে সময় কাটাচ্ছেন তাই বর্ষার মধ্যে আর ড্রাইভার কে না ডেকে কষ্ট না দিয়ে আমি নিজেই মটর সাইকেল চালিয়ে এখানে এসেছি।কথাগুলো শুনে সবজির দোকানদার ও প্রতিবেদক হতবাক হয়ে গেলেন যে প্রশাসনে এমন সাদামাটা জীবন যাবন করেন এমন অফিসার আজও আছেন।পরে সবজি কিনে নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী নিজেই মটরসাইকেল স্টার্ট দিয়ে রওনা দিলেন ইউএনও বাঙলোর উদ্যেশ্যে।এসময় প্রতিবেদক গোপনে নির্বাহী অফিসারের একটি ছবি তোলেন এবং অনুমতি ছাড়াই ছবি তোলার জন্য প্রতিবেদক ইউএনও মহোদয়ের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।
প্রকৃত পক্ষে বাস্তব জীবনে এমন দৃশ্য খুবই কম দেখা যায়।সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী যোগদানের পর থেকেই খুব অল্প দিনের মধ্যেই সাধারন জনগনের আস্থা অর্জন করে চলেছেন।ফেইজবুকে কোন সাহায্যের আবেদন দেখলে তিনি দ্রুত তার ব্যবস্থা নেন।।কোন প্রতিবন্ধী বা পঙ্গু মানুষ হুইল চেয়ার চাইলে তিনি দ্রুত হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দেন।কোথায় বাল্যবিবাহ হচ্ছে এমন খবর পেলেই তিনি সেখানে থানার ওসি সাহেব কে নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেন। সম্প্রতি লাবনী মোড়ে রাস্তায় একজন মানুষ ট্রাকে চাপা পড়ে পিষ্ট হন। এসময় ইউএনও দেবাশীষ গাড়ি যোগে ঐ রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন ডিসি অফিসে।ট্রাকে পিষ্ট হওয়া মানুষের মর্মান্তিক মৃত দেখে ইউএনও'র হৃদয় চরম ভাবে বিক্ষিপ্ত হয়। পরে ইউএনও দেবাশীষ চৌধুরী সাতক্ষীরা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের মাধ্যমে নিহত ব্যক্তির পরিচয় জেনে রাত ১১ টার দিকে ইউএনও দেবাশীষ চৌধুরী সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান কে নিয়ে ট্রাকে পিষ্ট হওয়া ব্যক্তির স্ত্রীর নিকট দশ হাজার টাকা প্রদান করেন নিহতের দাফন কাফনের জন্য। বিষয়টি দেখে রইচপুর গ্রামের মানুষ গুলো ইউএনও দেবাশীষ চৌধুরী কে মানবিক নির্বাহী অফিসার বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।