দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জীবন চলতে থাকবে, জীবন স্থবির থাকতে পারে না। তারপরেও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধিটা মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।
রোববার (২১ জুন) গণভবন একনেক বৈঠকে অংশগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে অংশগ্রহণকারী মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের উন্নয়নে একটা ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি ধারাবাহিকতা বজায় রেখে যতটুক সম্ভব উন্নয়নের গতিটা ধরে রাখতে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এরইমধ্যে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্যসহ অনেককে হারিয়েছি। দেশবাসীর কাছে এটুক বলব, আসুন সকলে মিলে দোয়া করি আল্লাহ যেন এই করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি দেন। এটি শুধু বাংলাদেশ বলে না বিশ্বব্যাপী সমস্যা। মানুষ যেন করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে সেটিই আমরা চাই।’
তিনি বলেন, ‘দেশবাসীকে অনুরোধ সবাই স্বাস্থ্যবিধিটা মনে চলবে। জীবন চলতে থাকবে, কারণ জীবন স্থবির থাকতে পারে না। তারপরেও স্বাস্থ্যবিধিটা মেনে চলার আহ্বান জানাই।’
প্রধানমন্ত্রীর ৯ অনুশাসন
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ৯টি অনুশাসন দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
একনেক বৈঠক শেষে এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘একনেক বৈঠকে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সময় এসব অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের আওতায় নির্মিত রাস্তাগুলোর যথাযথ মান বজায় রেখে কাজ করতে হবে। দেশের প্রতিটি কারাগারে ভার্চুয়াল আদালত স্থাপন করতে হবে। রেলওয়ের কারখানাটি আধুনিকায়ন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অপ্রয়োজনে এসি চালানোর প্রয়োজন নাই। নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় এসি ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। গ্রামে মানুষ খোলামেলা আবহাওয়ায় বেড়াতে পারছে বলে সেখানে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ ছড়ানোর ক্ষেত্রে এসি ভূমিকা রাখতে পারে। তাই এসি ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের পুকুর খনন প্রকল্পে অনেক দুর্নীতি হয়। এখন থেকে পুকুর বা জলাশয় খনন প্রকল্পে বিশেষ নজর দিতে হবে। পুকুর বা জলাশয়ের মাটি কাটার পর সেই মাটি কোথায় যায়, সেগুলো তদারকি করতে হবে। ঠিকাদাররা পুকুরের পাড় কেটে পরিষ্কার করে নিচের দিকের মাটি কাটে না। অথচ বিল নেন পুরোটাই।’ এ ধরনের অনেক অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছেও গিয়েছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, মাছ চাষের জন্য জলাশয়ের শুধু পাড় সংস্কার করলে হবে না। জলাশয়ের ওপর ও নিচের আবর্জনাও পরিষ্কার করার অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী দেশে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘এই মুহূর্তে বেশি করে খাদ্যসংশ্লিষ্ট প্রকল্প নিতে হবে এবং শিল্প গড়ে তুলতে হবে।’ একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে বালু মহালের স্থান চিহ্নিত করে সময়ে সময়ে আপডেট করতে হবে। এতে নদী ভাঙন কমবে। দেশের বালুমহাল আগের অবস্থানে নেই। বালুমহাল নিয়ে অনেক ধরনের অভিযোগও আমার কাছে আসে।’
-কালের আলো নেট।