মাহফিজুল ইসলাম আককাজ: বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরায় ৪৮তম জাতীয় সমবায় দিবস-২০১৯ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (০২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও সমবায় বিভাগ সাতক্ষীরার আয়োজনে শহরের নিউ মার্কেট চত্বর’র সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভাস্থলে গিয়ে মিলিত হয়। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বদিউজ্জামান’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বোংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাতক্ষীরা সদর ০২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুািক্তযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি রবি বলেন,‘দশে মিলে করি কাজ হারিজিতি নাহি লাজ। যেখানে সততা ও কর্ম দক্ষতা থাকে সেখানে সমবায় সফলতা পায়। উন্নয়ন প্রচষ্টায় সমবায়ের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, খাদ্য নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করার জন্য সমবায়ের আন্দোলনকে দেশের কৃষিক্ষেত্রের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। দেশের উন্নয়নে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ গুলোকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তরিত করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে সমবায়। নেতৃত্ব সৃষ্টি, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সমবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে উল্লেখ করে এমপি রবি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য সমবায়ের সঙ্গে অধিকহারে নারীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমবায়কে আমাদের সংবিধানের অর্থনৈতিক নীতিমালায় সংযুক্ত করে গেছেন, সংবিধানের ১৩ অনুচ্ছেদে। বঙ্গবন্ধু কৃষি সমবায় সমিতি এবং মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি গঠন করেছিলেন। তিনি তাঁতী সমবায় সমিতি ও শিল্প সমবায় সমিতি গড়ে তুলেছিলেন। আজ বাংলাদেশের অন্যতম সমবায়ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটা জাতির পিতার হাতেই গড়া। সমবায় ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণের হাতিয়ার। তিনি কৃষি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, শিল্প উদ্যোগ, কৃষি ঋণসহ সবক্ষেত্রেই সমবায়ভিত্তিক উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থাপনা প্রসারিত করতে চেয়েছিলেন। দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে সমবায় হল একটি পরীক্ষিত কৌশল।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সমবায় অফিসার মো. হাসান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুজ্জামান, জেলা মহিলা অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার ফাতেমা জোহরা ও প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণ প্রদান কর্মসুচির চেয়ারম্যান প্রাণনাথ দাশ প্রমুখ।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রুপায়ন কৃষি সমবায় সমিতির সভাপতি অমিত কুমার ভট্টাচারীয়া, জেলা সেলুন মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি সুবল কুমার বিশ্বাস, শুভেচ্ছা মহিলা সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি লিলি জেসমিন, সাতক্ষীরা বনলতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান, সাতক্ষীরা জেলা কেন্দ্র খুদ্র নৃ-গোষ্টি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোখলেছুর রহমান প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে সমবায় মেলার স্টল পরিদর্শন করেন অতিথিবৃন্দ। সমবায় মেলায় ৯টি স্টল স্থান পেয়েছে। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাবেক ব্যাংকার হেনরী সরদার।