শেখ আরিফুল ইসলাম আশা : সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে যন্ত্রাংশ ক্রয়ের নামে ১৮ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগে সংবাদ প্রচার ও নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাওয়ের পর বিভাগী তদন্ত শুরু হয়েছে। দুপুরে খুলনা বিভাগীয় ডেপুটি ডাইরেক্টর তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. সৈয়দ জাহাঙ্গীর হোসেন , সদস্য মঞ্জুরুল মুরশিদ ও জাহাতাপ হোসেন এই তদন্ত কার্য সম্পন্ন করেন।
এসময় তদন্ত তদারকি করতে আসেন খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা: রাশেদা সুলতানা।
এদিকে তদন্ত চলাকালীন সেখানে উপস্থিত হয়ে নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ সাতক্ষীরার পক্ষে সংগঠনের সহ-সভাপতি শেখ ওবায়েদুস সুলতান বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুম পরিচালকের সাথে মতবিনিময় করেন এবং নাগরিকদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।
পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা নাগরিক নেতৃবৃন্দকে জানান, প্রাথমিকভাবে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন উক্ত মালামাল গ্রহণ ও বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে কোন প্রকার নিয়মকানুন মানা হয়নি। তিনি নাগরিক নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন যে, অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে তার দপ্তর সঠিকভাবে তদন্ত সম্পন্ন করা করবে। তিনি বলেন, ২৪ এপ্রিল নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও করার পরদিনই তিনি একটি তদন্ত টিম গঠন করে দেন। ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে অন্যান্য ব্যস্ততা থাকায় আজ তদন্ত টিম আনুষ্ঠানকিভাবে কাজ শুরু করেছে।
একই সাথে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে গুরুতর অনিয়ম এবং অন্যান্য সমস্যা নিরসনে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি নাগরিক নেতৃবৃন্দকে প্রতিশ্রুতি দেন।
বাড়তি তথ্য: গত ১৭-১৮ অর্থ বছরে জেলায় স্বাস্থ্য যন্ত্রাংশ ক্রয়ের জন্য তৎকালিন সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ও স্টোরকিপার একেএম ফজলুল হক যোগসাজস করে বরাদ্দের ১৩ কোটি টাকার পুরোটাই লোপাট করে। পরে একই টেন্ডারের আওতায় আবারো বরাদ্দ বাড়িয়ে মোট ১৮ কোটি টাকা গায়েব করলে ৯ এপ্রিল ঢাকা থেকে উপসচিব হাছান মাহমুদ আকস্মিক সাতক্ষীরায় এসে এসব যন্ত্রাংশের খোঁজ নিলে তা দেখাতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয় এবং নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরা জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু করে। তারা ২৪ এপ্রিল সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও দুদক চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। এদিন দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধান করলে তারাও সত্যতা পান। পরদিন ২৫ এপ্রিল বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ১৫দিনের মধ্যে জমা দেয়া হবে বলে জানান।