♠♠♠
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সমাজে আমরা বিভিন্ন ঘটনা দেখে থাকি পত্র পত্রিকার মাধ্যমে।কিন্তু সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাথন্ডা গাইনপাড়ায় দেখা গেলা এক মর্মান্তিক ঘটনা।ঘটনাটি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টায় মেতেছিল অনেকেই।কিন্তু সাতক্ষীরা সদর সার্কেল ও সাতক্ষীরা থানা পুলিশের অক্লান্ত চেষ্টায় উৎঘাটন করা হয়েছে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার প্রকৃত রহস্য।
কাথন্ডা ইউনিয়নের গাইনপাড়া এলাকায় বসবাস করতো প্রতিবন্ধি সিদ্দিকুর রহমান ও তার প্রতিবন্ধি স্ত্রী মেরেনা খাতুন এবং তাদের কন্যা কুলসুম খাতুন।কুলসুম খাতুন ক্লাস সেভেনে পড়ে।খুব শান্তিতে বসবাস করছিল প্রতিবন্দি দম্পত্তি তাদের সন্তান দের কে নিয়ে।কিন্তু তাদের সুখের ঘরে আগুন দিয়ে দিলো পাসের বাড়ির লম্পট জিয়ারুল ইসলাম।জিয়ারুল ইসলামের স্ত্রী থাকলেও সে প্রতিবন্ধি কন্যা ৭ম শ্রনীর কুলসুম খাতুনের দিকে কু নজর দিতো।প্রতিবন্ধি দম্পতি দুই জন ই ভিক্ষা করে সংসার চালায়।যে কারনে দিনের বেলায় তারা বেশির ভাগ সময় বাড়িতে থাকতো না।শহর থেকে ভিক্ষা করে বাড়ি আসতে আসতে তাদের মাঝে মাঝে রাত হয়ে যেতো।
বাড়িতে পিতা মাতা না থাকার সুযোগে প্রতিবেশি লম্পট জিয়ারুল প্রায় প্রায় প্রতিবন্ধি কণ্যা কুলসুম খাতুনের ঘরে যেতো এবং তাকে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখাতে।কুলসুম খাতুন কে বিয়ে করার ও অফার দিয়েছিল জিয়ারুল।এক পর্যায়ে জিয়ারুল জোর পুর্বক প্রতিবন্ধি কন্যা কুলসুমের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।এদিকে সামাজিক লোক লজ্জার কারনে প্রতিবন্ধি কণ্যা কুলসুম কাউকে কিছু বলেনি।দিনের পর দিন সুযোগ বুঝে লম্পট জিয়ারুল তাকে জোর পুর্বক ধর্ষন করতে থাকে।একপর্যায় কুলসুম গর্ভবতী হয়ে যায়।তখন কুলসুমের প্রতিবন্ধি পিতা মাতাও বিষয়টি জেনে যায় এবং স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তি দের কে জানায়।পরে স্থানীয় জনগনের চাপে লম্পট জিয়ারুল প্রতিবন্ধি কণ্যা কুলসুম খাতুন কে ভূয়া কাবিন নামায় স্বাক্ষর করে বিয়ে করেন।পরিস্থিতা একটু শান্ত হলে জিয়ারুলের ভাই রেজাউল,জিয়ারুলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী নাছিমা গর্ববতী কুলসুম কে তার পেটের বাচ্চা নস্ট করার জন্য কৌশলে শহরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়।কিন্তু বাচ্চার বয়স ৫-৬ মাস হওয়াতে ডাক্তার অপারগতা জানায় তাদের কে।বিষয় টি জেনে জিয়ারুল বাড়ি থেকে পালায় এবং কুলসুমের উপর জিয়ারুলের ভাই,স্ত্রী ও পিতা-মাতা ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন করেন।
এসময় কোন উপায় না পেয়ে প্রতিবন্ধি দম্পত্তি তাদের নির্যাতিত কণ্যা কুলসুম কে নিয়ে আইনের আশ্রয় নিতে চলে আসেন সাতক্ষীরা সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মেরিনা আক্তারের কার্যালয়ে।সকল তথ্য-উপাত্ত ও অভিযোগ শুনে সদর সার্কেল মহোদয় সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মারুফ আহম্মেদ কে মামলা রুজু করার নির্দেশনা দেন। সাতক্ষীরা থানার মামলা নং ২১ তাং০৮/০৭/২০১৮।মামলায় জিয়ারুল সহ তার প্রথম স্ত্রী,ভাই ও পিতা-মাতা কে আসামী করা হয়।
চাঞ্চল্যকর এই মামলাটির তদন্তপূর্বক ব্যাবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব পড়ে সাতক্ষীরা থানার সাব-ইন্সপেক্টর মিরাজ আহম্মেদের উপর।সরকারী নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবন্ধি কণ্যা কুলসুম খাতুন কে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্ত্তি করে ডাক্তারী পরীক্ষা করা হয়।ডাক্তারী রিপোর্টে কুলসুমের ধর্ষনের আলামত পাওয়া যায় ও তার গর্ভে ৭ মাসের একটি বাচ্চা দেখা যায়।মামলাটি রুজু হওয়ার পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর মিরাজ আহম্মেদ কয়েক দফায় অভিযান চালায় ধর্ষন মামলার আসামী জিয়ারুলের বাড়িতে। কিন্তু এ পর্যন্ত কাউকে বাড়িতে পাওয়া যাইনি।সর্বশেষ গতকাল ৮ ই জুলাই ভোর রাত্রে কাথন্ডা এলাককায় জনৈক এক প্রতিবেশির বাড়ি থেকে ধর্ষক জিয়ারুল কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন সাব-ইন্সপেক্টর মিরাজ আহম্মেদ।ধৃত আসামীকে আজ বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করা কালে ধর্ষক জিয়ারুল কাঠগড়ায় দাড়িয়ে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি দেন এবং কুলসুম কে ধর্ষন করার অপরাধ ও কুলসুমের গর্ভের ৭ মাসের বাচ্চাটি নিজের বলে স্বীকার করেন।এসময় বিজ্ঞ আদালত ধর্ষক জিয়ারুল কে জামিন না মজ্ঞুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা থানার সাব-ইন্সপেক্টর জনাব মিরাজ আহম্মেদ আপডেট সাতক্ষীরা ডটকম কে জানান,আজ ২/৩ রাত আমি না ঘুমিয়ে কাথন্ডা এলাকায় এ্যম্বুস করে ছিলাম।পরে অনেক কৌশলে আসামীর প্রতিবেশির সহায়তায় আজ ভোর রাতে ধর্ষক জিয়ারুল কে গ্রেপ্তার করে আইনের কাঠাগোড়াতে দাড় করাতে সক্ষম হয়েছি।