খুলনা রেঞ্জ সহ সাত রেঞ্জের ডিআইজি ও ৫ পুলিশ কমিশনারকে সরানো হল।এই বদলির মাধ্যমে দেশের সকল রেঞ্জ ডিআইজিকেই সরিয়ে দিল অন্তর্বর্তী সরকার।
ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে পুলিশের প্রায় সকল পর্যায়ে রদবদলের ধারাবাহিকতায় এবার সরানো হল সাত রেঞ্জের ডিআইজি এবং মহানগর পুলিশের ৫ কমিশনারকে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নূরুল ইসলাম, চট্রগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা ও খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হককে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে পাঠানো হয়েছে।
সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ মিজান শফিউর রহমানকে রেলওয়ে পুলিশে, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনিসুর রহমানকে নৌ পুলিশে, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটে এবং ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি মো. শাহ আবিদ হোসেনকে ট্যুরিস্ট পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।
গত ১৩ আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের এলাকা রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন এবং সেখানকার পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
নতুন করে সাত রেঞ্জ ডিআইজিকে বদলির মাধ্যমে দেশের সকল রেঞ্জ ডিআইজিকেই সরিয়ে দিল সরকার।
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলামকে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে পাঠানো হয়েছে। রাজশাহীর কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদারকে বদলি করা হয়েছে পুলিশ টেলিকম অ্যান্ড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট (টিঅ্যান্ডআইএম) বিভাগে।
সিলেটের কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান ও বরিশাল মহানগরীর পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবিরকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনিভেস্টিগেশনে (পিবিআই) এবং গাজীপুরের কমিশনার মো. মাহবুব আলমকে রেলওয়ে পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে ঢাকার কমিশনার হাবিবুর রহমান ও রংপুরের কমিশনার মনিরুজ্জামানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। শুধুমাত্র খুলনা মহানগর পুলিশের কমিশনার মোজাম্মেল হক ছাড়া বাকি সাতটি মহানগর পুলিশের কমিশনারকেই সরানো হল।
একইদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রজ্ঞাপনে ১০ জেলার পুলিশ সুপারসহ একই পদমর্যাদার ১১ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।
সিলেট মহানগরীর উপ-কমিশনার মো. আজবাহার আলী শেখ, মানকগঞ্জের এসপি মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান ও গাইবান্ধার এসপি মো. কামাল হোসেনকে রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে, চট্টগ্রামের এসপি এস এম শফিউল্লাহ, কিশোরগঞ্জের এসপি মোহাম্মদ রাসেল শেখ ও হবিগঞ্জের এসপি আক্তার হোসেনকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে যুক্ত করা হয়েছে।
বাগেরহাটের এসপি আবুল হাসনাত খানকে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে, মাগুড়ার এসপি মো. মশিউদ্দৌলা রেজাকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে, নাটোরের এসপি মো. তারিকুল ইসলামকে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
আর সিরাজগঞ্জের এসপি মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল ও পটুয়াখালীর এসপি মো. আবদুস ছালামকে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
প্রবল গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট সরকারের পতন হলে শেখ হাসিনার আমলে নিয়োগ দেওয়া পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পরদিন চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। তার স্থলাভিষিক্ত করা হয় ট্রাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট মো. ময়নুল ইসলামকে।
৭ অগাস্ট র্যাব মহাপরিচালক হারুন-অর-রশিদকে সরিয়ে পুলিশের এই এলিট ফোর্সের নেতৃত্বে আনা হয় অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমানকে।
ঢাকার পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে দিয়ে সেই জায়গায় চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডির উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. মাইনুল হাসানকে। দুই দফায় ঢাকার সকল থানার ওসিকে বদলি করে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে।
বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম ও সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের মতো প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তাদের।