এসএম শহীদুল ইসলাম: পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদ তখনও ম্লান হয়নি। গাঁয়ের মেঠোপথে কুয়াশার হালকা আবরণে শীতল পরশ। শীতের আমেজ। তারই মাঝে সুর ও ছন্দের আবেশে ‘আয়রে স্বজন সাথী, সাতঘরিয়ার পিঠায় মাতি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে চলছিলো পিঠা উৎসব। গানে গানে বন্দনা করা হচ্ছিলো হরেক রকম পিঠার। আয়োজন সাতক্ষীরা লেডিস ক্লাবের মাঠে। পিঠা বন্দনার পর শীত সন্ধ্যায় লোক সংগীত, কবিতা আবৃত্তি ও পিঠা উৎসবের আয়োজকও সাতক্ষীরা জেলা লেডিস ক্লাব। পৌষ-পার্বণে মায়ের হাতের পিঠা খেতে বসে খুশিতে বিষম খাওয়ার স্মৃতিই যেন সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সাতক্ষীরা অফিসার্স ক্লাব ও জেলা লেডিস ক্লাবের উন্মুক্ত সবুজ চত্ত্বরে।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকাল থেকে শুরু হয় পিঠা উৎসব। উৎসব চলে রাত পর্যন্ত। নানা শ্রেণি পেশার মানুষের উপস্থিতি উৎসবকে মিলনমেলায় পরিণত করে।
উৎসবে ১৪টি স্টলে শতাধিক পিঠা স্থান পায়। বাহারী নামের পিঠার মধ্যে ছিল পাতা পিঠা, মাছ পিঠা, কুলি পিঠা, ফুল পিঠা, সুজির পিঠা, গোলাপ পিঠা, শামুক পিঠা, সরু পিঠা, চিতই পিঠা, লাভ পিঠা, জামাইবাবু পিঠা, ডিমের পিঠা, চিকেন পুলি, ফুলঝুরি, সুজির পানতোয়া, সেমাই পিঠা, নারকেল পাটিসাপটা, রসের পিঠা, সবজি পিঠা, সুন্দর ইলিশ পিঠাসহ কয়েক শত প্রকার পিঠা।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ইসমাইল হোসেন (এনডিসি) এর পতœী রাশেদা আক্তার গাজী প্রধান অতিথি হিসেবে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের সহধর্মিনী ও জেলা লেডিস ক্লাবের সভাপতি লাভলী কামাল। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ পতœী রোকসানা ইসলাম শিল্পী, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরীর পতœী ও লেডিস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোমা দাস চৌধুরী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ইসমাইল হোসেন (এনডিসি), সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল, জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম। উৎসবে উপস্থিত ছিলেন জেলার সাত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন-উর-রশিদ, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি, নারী নেত্রী জ্যোৎস্না দত্তসহ প্রশাসন, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের উর্ধতনরা। আরও ছিলেন রাজনীতিক, কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী। সুন্দর ও মনোরম পরিবেশের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় শীত সন্ধ্যায় কবিতা আবৃত্তি ও পিঠা উৎসব। কবিতা আবৃত্তি ও পিঠা উৎসবের সাথে যুক্ত হয় এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। পরে অতিথিগণ স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং যে যার পছন্দের পিঠার স্বাদ নেন।