জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি যেকোনো ধরনের অসম্মান ও অবমাননা রুখতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অঙ্গীকার করেছেন দেশের সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার ঢাকায় বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে বিসিএসের সব ক্যাডারের সমন্বয়ে গঠিত সরকারি কর্মকর্তা ফোরাম আয়োজিত সমাবেশে তারা এই অঙ্গীকার করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস।
‘জাতির পিতার সম্মান, রাখবো মোরা অম্লান’ স্লোগান দিয়ে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে পুলিশের আইজিসহ বিসিএস সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতি, বিসিএস টেলিকম সমিতি, বিসিএস কৃষি ক্যাডার, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারসহ প্রায় প্রতিটি সেক্টরে বিসিএস কর্মকর্তাদের অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘আমরা ২৯টি ক্যাডার সার্ভিসের সবাই আজ অঙ্গীকার করছি যে, জাতির পিতার অসম্মান আমরা হতে দেব না। জয় বাংলা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান। আমরা সবাই কেন বক্তৃতার শেষে জয় বাংলা বলবো না। আশা করি আজ থেকেই শুরু করবো এবং প্রয়োজনে সরকারের অনুমতি নেব।’
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংবিধানিকভাবে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃত। বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।’
হেলালুদ্দীন বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এখনো এই মহান নেতাকে অস্বীকার করে যাচ্ছে। তারা হুংকার দিয়ে যাচ্ছে যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ওপর কোনো রকমের আঘাত, কোনো অপমান মেনে নেয়া হবে না, সহ্য করা হবে না।’
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজির আহমেদ বিপিএম-বার বলেন, ‘স্বাধীনতা, সংবিধান, রাষ্ট্র ও জাতির জনক- নো বডি ক্যান টাচ দেম’।
আইজিপি বলেন, ‘আমরা তাদের মোকাবেলা করবো। বঙ্গবন্ধু দেশ, পতাকা, মানচিত্র দিয়েছেন। তার ওপর হামলা সংবিধানের ও রাষ্ট্রের ওপর হামলা। রাষ্ট্র অবশ্যই বিধিবিধান অনুযায়ী কঠোরহস্তে মোকাবেলা করবে।’
বিসিএস অডিট ও অ্যাকাউন্টস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব গোলাম সারোয়ার ভুঁইয়া বলেন, ‘জাতির পিতাকে যারা অসম্মান করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করছি।’
বিসিএস কর অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফজলে হায়াত কায়সার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না, আর বাংলাদেশ না হলে এত ক্যাডার সার্ভিস হতো না। ভাস্কর্য যারা ভেঙেছে তারা দেশবিরোধী, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
বিসিএস তথ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘স্বাধীনতার বিপক্ষে যারা থাকবে তাদের বিপক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের কণ্ঠ সোচ্চার থাকবে। ভাস্কর্য মোটেও ধর্মীয় বিষয় নয়, এটি শিল্পকর্মের অংশ। বাংলাদেশ এটি যুগ যুগ ধরে প্রচলিত। হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে এত কথা কেন। এটি হলো রাজনীতি। কর্মকর্তাদের স্বাধীনতার প্রশ্নে অবস্থান থাকতে হবে।’
বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডারের পক্ষে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের চাকা পেছনে নিতে চায় সেই একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে বেছে নিয়েছে তারা রাতের অন্ধকারে ভাস্কর্য ভেঙেছে। আমরা এটাকে সহজভাবে মেনে নিতে পারি না।’