স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আইনের সব কিছু প্রয়োগ হয়ে গেছে, শুধু দুই থেকে তিন জায়গায় আগামী জুনের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময়সীমা বর্ধিত করা হয়েছে। আইন স্থগিত করা হয়নি, কোনো কিছু স্থগিত করা হয়নি, সবই চলবে।
রোববার(২৪ নভেম্বর) সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য টাস্কফোর্সের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
সড়ক আইন বাস্তবায়নে গিয়ে হোঁচট খেয়েছে সরকার। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এ আইন শিথিলভাবে বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছেন। সংসদে পাস হওয়া একটি আইনের বিষয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া যায় কিনা- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইন কিন্তু ইমপ্লিমেন্ট হয়ে গেছে। কয়েকটি বিষয়ে আমাদের দুর্বলতা রয়েছে, যেমন আমরা বিআরটিএ লাইসেন্স নবায়ন করতে পারিনি, এটার জন্য অ্যাকশন প্ল্যান করতে শুরু করেছি। লাইসেন্স না দিলে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করব। তাদের তাই সময় বেঁধে দিয়েছি। কয়েকটি জায়গায় ৩০ জুনের মধ্যে তাদের কাজগুলো সেরে নিতে হবে। লাইসেন্স আপডেট করতে হবে। তাদের বিভিন্ন যানবাহনে যে সমস্যা রয়েছে সেটিও ৩০ তারিখের মধ্যে সমাধান করা হবে।’
‘তারা ডিফেন্ডার হয়ে গিয়েছিল ট্যাক্স টোকেনের বিষয়ে। সেই জরিমানাটা তারা মওকুফ চেয়েছিল। (সড়ক পরিবহন) সচিবের কাছে তারা আবেদন জমা দেবেন, মন্ত্রী (সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী) এটা সুপারিশ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। আশা করি জরিমানা এবারের মতো মাফ করা হবে। তাদের অনুরোধ করা হয়েছে, ভবিষ্যতে আর কোনো জরিমানা মওকুফ হবে না’ বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আইনের সব কিছু প্রয়োগ হয়ে গেছে, শুধু দুই থেকে তিন জায়গায় আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সময়সীমা বর্ধিত করেছি। আইন স্থগিত করা হয়নি, কোনো কিছু স্থগিত করা হয়নি, সবই চলবে।’
চালকরা বলছেন, নতুন আইনে জরিমানা দেয়া সম্ভব নয়, দুর্ঘটনায় হত্যা প্রমাণিত হলে ফাঁসি- এগুলো নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের আপত্তি। এ দুটি বিষয় সংশোধন হচ্ছে কিনা- এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আইনে কোনো মৃত্যুদণ্ডের কথা লেখা নেই। অপরাধ করলে কত বছর সাজা হবে এবং সর্বোচ্চ জরিমানা কত হবে তা আইনে লেখা আছে। (সেই জরিমানা) কমার কোনো প্রশ্ন আসে না, সর্বোচ্চ লিমিটের বিষয়ে জজ সাহেব ব্যবস্থা নেবেন, আমরা সিলিং দিয়েছি সর্বোচ্চ, তিনি ইচ্ছা করলে কোন জায়গায় যেতে পারেন সেটা তার এখতিয়ার।’
পরিবহন শ্রমিকদের আইনের বিভিন্ন ধারা জামিনযোগ্য করার দাবি ছিল- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, এটি আরও বৃহৎ আকারে আলোচনা হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটি জিনিস ক্লিয়ার করতে চাই- আইনটি বাস্তবায়নের আগে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন। আমি, আইনমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রী মহোদয়- আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে একটা সুপারিশ দিয়েছি। সেই সুপারিশ সড়ক পরিবহনমন্ত্রী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী অ্যাকশনে যাবেন।’
সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খানসহ টাস্কফোর্সের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।