দেশের সকল উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছি। যে সকল দপ্তরের কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না তাদেরকেও দেখতে পাচ্ছি। তাদের সেবা নেওয়ার চেষ্টা করছি। যে সব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা ছিল তারাও মেলায় দেখছি সক্রিয়। অনেকে বলেছে উন্নয়নের উৎসব। কথাগুলো ছিল যেন মেলায় আগত মুহিব উল্লাহ হাসান, সৈয়দ আনিসুজ্জামান, তাছলিমা খাতুনের মতো আরও হাজারও দর্শনার্থীর মনের কথা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার খুলনাসহ দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় আয়োজিত চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করেন। জেলা প্রশাসন আয়োজিত নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে শনিবার পর্যন্ত চলবে এ মেলা। শুক্রবার ছিল মেলার দ্বিতীয় দিন। শনিবার সমাপনী। সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ১৫৬টি স্টল তাদের জনবান্ধব সেবা নিয়ে মেলায় এসেছে।
জেলা নির্বাচন অফিসের স্টল হতে নির্ধারিত ফি দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে হারিয়ে যাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ভোটারদের মধ্যে যারা স্মার্টকার্ড গ্রহণ করতে পারেননি তারা মেলার স্টল হতে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করতে পারবেন। এর সাথে থাকছে ভোটার স্থানান্তর ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি-সাক্ষর পরিবর্তনের সুযোগ। পাসপোর্ট অফিসের স্টলে মিলবে অন দ্যা স্পট পাসপোর্ট প্রাপ্তির আবেদন ফরম পূরণের সহায়তা ও ফরম জমাদানের সুযোগ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের স্টলে রয়েছে সন্দেহভাজন মাদক বিক্রেতা ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণের বক্স। জেলা পুলিশের স্টলে সহজে মিলবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও পুলিশ ভেরিফিকেশন। সাথে রয়েছে জিডি করার ব্যবস্থা। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের স্টলে থাকছে পঁচিশ শতাংশ ছাড়ে বই কেনার সুযোগ। কারাবন্দীদের তৈরি করা চমৎকার পণ্য সম্ভার নিয়ে সাজানো হয়েছে জেলা কারাগারের স্টল। স্বাস্থ্য বিভাগের স্টলে পাওয়া যাবে রক্তচাপ নির্ণয়, রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা ও রক্তের সুগার পরীক্ষার সুযোগ। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার্থীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের স্টলে এসে সমাপনী পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারছে। সাথে থাকছে উপবৃত্তিসংক্রান্ত সকল সেবা। খাদ্য ব্যবসায়ীরা চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের স্টল হতে লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন করতে পারবে। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের জন্য জেলা প্রশাসন স্থাপন করেছে বঙ্গবন্ধু কর্নার, শিশু কর্নার ও সিনিয়র সিটিজেন কর্নার। এছাড়া বেসরকারি সংস্থার স্টলসমূহ তাদের আকর্ষণীয় পণ্য ও বর্ণিল উপস্থাপনা নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছে।
মেলায় আগত আযম খান কমার্স কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুহিব উল্লাহ হাসান বলেন, উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ সরকারের কর্মকা- ভূয়সী প্রশংসনীয়। যা এই মেলার মাধ্যমে তিনি খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন। এক কথায় উন্নয়নের উৎসব এটি।
প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির খুলনা মহানগরীর সভাপতি সৈয়দ আনিছুজ্জামান বলেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা- দেখে সকলের গর্ব হচ্ছে। এ ধরনের মেলায় উন্নয়ন উপস্থাপনের জন্য জনগণ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি খুলনা বিভাগের উপ-পরিচালক জিয়াউর রহমান বলেন, তাদের স্টলের মাধ্যমে নানা ধরনের সেবা দেওয়া হচ্ছে। যার মাধ্যমে দর্শনার্থীরা দেখতে এসেও সেবা পেতে আগ্রহী হচ্ছে।
খুলনা জেলা নির্বাচন অফিসের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, তাদের স্টলে সাধারণ কাজের সাথে সাথে ইভিএম প্রদর্শন করা হচ্ছে। যার ফলে সাধারণ সেবা পেতে আসা দর্শনার্থীরা ইভিএম বিষয়ে জানতে আগ্রহী হচ্ছে। আর ইভিএম সম্পর্কে জনগণের বিশ্বাসের জন্য তাদের সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান করা হচ্ছে। যাতে দর্শনার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে।
খুলনা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামান বলেন, সাধারণ জনগণ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নানা ধরনের সেবা পেয়ে খুবই আগ্রহী হচ্ছে। এর মাধ্যমে অধিদপ্তরের সেবা দর্শনার্থীদের কাছে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌঁছানো হচ্ছে। মাদকের ভয়াবহতা এবং নিরাময় সম্পর্কে বোঝানো হচ্ছে।
খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমেন্দ্রনাথ পোদ্দার বলেন, উন্নয়ন মেলার মাধ্যমে সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ সুন্দরভাবে শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের মধ্যে উপস্থাপন করা হচ্ছে।