সুপ্রিম কোর্টে খালাস পেলেও আদেশ আসার আগেই সাতক্ষীরার জোড়া পুলিশ হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামী দূরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত অবেদ আলী খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালের কয়েদি সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার মারা গেছেন। সোমবার সকাল ৯টায় নিজ বাড়ি সাতক্ষীরা শহরের কুকরালিতে নামাজে জানাজা শেষ তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। অবেদ আলীর বাবার নাম মৃত রজব আলী শেখ।
মৃতের ছেলে শেখ আশিকুর রহমান শাওন বলেন, ২০০৩ সালের ৪ ফেব্র“য়ারি ইটাগাছা পুলিশ ফাড়ির সিপাহী মোতালেব ও ফজলুল হককে ইটাগাছা এলাকার ফটিক বাবুর বাড়ির সামনে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে পরদিন সদর থানায় একটি হত্যা মামলার দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ অবেদ আলীসহ ১০ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আসামী রায়হানুল ইসলাম ও শোয়েবর আলী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০০৬ সালে রায়হানুল ইসলাম, অবেদ আলী ও জাকির হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। আব্দুস সোবহান, আব্দুস সালেক, মোঃ শাহীন ও মোঃ মিলনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। আসামী সোয়েবর আলী ও ছাদিক খালাস পান। আসামী বদরুজ্জামান মামুন উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করে তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন।
ফাঁসির আদেশের বিরুদ্ধে ২০০৩ সালে হাইকোর্টে আপিল করলে ২০১১ সালে শুনানী শেষে অবেদ আলীকে খালাস দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষ ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। ২০১৫ সালে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে থাকাকালি লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হন বাবা অবেদ আলী। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও আইনজীবীদের দৌড়ঝাপের পর সুপ্রিম কোর্টের খালাস আদেশটি দীর্ঘ ছয় মাস পর রোববার বিকেলে সাতক্ষীরা জজ কোর্টে এসে পৌছায়। ইতিমধ্যে রোববার সকাল ১০টায় খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বাবা অবেদ আলী মারা যান। সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষ রোববার রাত ৯টার দিকে বাবার লাশ সাতক্ষীরার বাড়িতে আনা হয়।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি এডভোকেট ওসমান গনি জানান, ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত রায়হানুল ইসলাম ও রোববার খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে মারা যাওয়া অবেদ আলী ব্যতীত মামলার সাতজন আসামী সোমবার যে কোন সময় জেলখানা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন।
সুত্রঃডেইলি সাতক্ষীরা ডটকম।