মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কিংবদন্তি নারী বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই। শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলা সদরের নিজ বাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তারামন বিবির বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি স্বামী আব্দুল মজিদ, এক ছেলে আবু তাহের, এক মেয়ে তাহমিনাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তারামন বিবিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাদ যোহর দাফন করা হবে। এজন্য আমি রাজীবপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছি।’
গত ৮ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে তারামন বিবিকে প্রথমে ময়মনসিংহ সিএমএইচ, পরে সেখান থেকে ঢাকার সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে সম্প্রতি তিনি বাড়ি ফেরেন।
তারামন বিবি ১৯৫৭ সালে কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আবদুস সোহবান এবং মায়ের নাম কুলসুম বিবি। তিনি মাত্র ১৩ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া গ্রামের তারামন বিবি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীদের রান্নাবান্না করে খাওয়ানো, তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা, পাকবাহিনীদের খবরাখবর সংগ্রহ করা এবং পাকবাহিনীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীনের পরে স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে যে দু’জন নারী মুক্তিযোদ্ধাকে বীরপ্রতীক খেতাব দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম তারামন বিবি। আরেক নারী বীরপ্রতীক কাঁকন বিবিও চলতি বছরের ২১ মার্চ ইন্তেকাল করেন।
প্রাসংঙ্গত মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কিংবদন্তি নারী বীরপ্রতীক তারামন বিবি অসুস্থ্য থাকায় গতবৎসর চট্রগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক মহোদয় তাকে দেখতে গিয়েছিলেন এবং তাকে আর্থিক সহযোগীতা করেছিলেন।বীরপ্রতীক তারামন বিবির ইন্তেকালের খবর শুনে চট্রগ্রাম রেজ্ঞ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক মহোদয় মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করে ফেইজবুকে স্টাটাস দিয়েছেন।