পাচার করতে না পেয়ে স্থানীয়দের বাঁধার মুখে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের বিপুল পরিমাণ ঔষধ ও ব্যান্ডেজ মাটির তলায় পুঁতে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে এসব ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের পিছনের কিচেনের পাশে মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এদিকে বিষয়টি পথচারীরা অবগত করলে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের এডিশনাল এসপি মেরিনা আক্তার।এসময় সদর সার্কেলের সাথে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃমোস্তাফিজুর রহমান,পরিদশক তদন্ত মোঃমহিদুল ইসলাম,পরিদর্শক (অপারেশ) সেকেন্দার আলী ও ইটাগাছা পুলিশ বাড়ির আইসি ইসরাফিল হোসেন।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের একটি ভবনের নির্মাণাধীন শ্রমিক, সদর উপজেলার আলীপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী কিচেন রুমের পাশের একটি ডোবায় মাটি দিয়ে চাপা দেওয়া বিপুল পরিমাণ এন্টিবায়োটিকসহ জীবনদায়ী ঔষধ ও ব্যান্ডেজ সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে ফেলে দেওয়ার জন্য তাদেরকে বলেন। তারা ওই কাজ করতে পারবেন না বলে স্থানীয়দের খবর দেন।
সরেজমিনে শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিছনে কিচেনের দেয়ালের বাইরে যেয়ে দেখা গেছে একটি ডোবার উপর দৃশ্যমান বেশ কিছু পরিমাণ ব্যান্ডেজ যার গায়ে জড়ানো কাগজের উপর লেখা ছিল এক্সরোল, এসেনসিয়াল ড্রাগের ফলিক এসিড, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এন্টিবায়োটিক এজিথ্রোমাইসিন -৫০০এমজি, এসকেএফ এর কিলম্যাক্স-২৫০এমজি সহ বিভিন্ন জীবনদায়ী ঔষধ। ওইসব ঔষধের অধিকাংশ স্টিপের উপর ডেট অফ এক্সপেয়ারী হিসেবে ১৯২২ সালের সেপ্টেম্বর লেখা আছে।
তবে উপরে দৃশ্যমান ঔষধের কয়েকগুণ ঔষধ মাটির নীচে রয়েছে জানতে পেরে সেখানে উপস্থিত হয় সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছাদিকুর রহমানর ছাদেক, পৌর যুবলীগের সভাপতি তুহিনুর রহমান তুহিন, পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ মফিজুর রহমানসহ কয়েকজন। একটি পাচারকারী চক্র ওই ঔষধ শুক্রবার রাতে বাইরে পাচার করতে না পেরে স্থানীয়দের তাড়া খেয়ে হাসপাতালের পিছনে মাটি দিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ভোরে বৃষ্টি হওয়ায় মাটি বসে যেয়ে ওই ঔষধ বেরিয়ে পড়েছে।
এদিকে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে দরজায় তালা লাগিয়ে সটকে পড়েন হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ শাজাহান আলী।
শনিবার বিকাল তিনটার দিকে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ কাজী হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তার মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি রিসিভ করেননি।
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ শাজাহান আলীকে হাসপাতালে আসার জন্য অনুরোধ করলে তিনি বাসায় চলে গেছেন দাবি করে মুঠো ফোনে বলেন, যদি ওই ধরণের ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাওয়া যেয়ে থাকে সেটা তার দায়িত্বপাওয়ার আগে অর্থাৎ ১৪/১৫ মাস আগের ঘটনা। বর্তমানে তার স্টোরে ঔষধ ঠিকঠাক রয়েছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলার বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক কেএম মোস্তফা কামাল প্রতিবেদক কে বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন।
সূত্র:দৈনিক সাতক্ষীরা ডটকম।