জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তৈরি করা সারাদেশের নদী-খাল ও জলাশয় দখলকারীদের তালিকা যাচাই-বাছাই করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার সচিবালয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর নাব্যতা এবং নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে পরামর্শ প্রদান, সুপারিশ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে গঠিত টাস্কফোর্সের সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান। যিনি টাস্কফোর্সেরও সভাপতি।
নদী রক্ষা কমিশন সারাদেশের নদী দখলকারীদের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে সমালোচনা রয়েছে, সেই তালিকায় থাকা সবগুলোই প্রকৃতভাবে অবৈধ কি না। অনেকে আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছেন। তালিকা প্রকাশের পর তা যাচাই-বাছাই করা হয়েছে কি না- এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নদী রক্ষা কমিশন সারাদেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একটি বই করেছে। এখন এটার ওপর মন্তব্য করার সুযোগ সবারই আছে। এটা নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে সেটা জানানোর সুযোগও সবার আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সেগুলো যাচাই-বাছাই করব। কাউকে জোরপূর্বক অপরাধের জায়গায় নিতে চাই না। আমরা যাচাই-বাছাই করেই আমাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
মন্ত্রণালয়ের উপাত্তে দখল উচ্ছেদের সংখ্যাটা অনেক বড়। কিন্তু প্রকৃত অবস্থা ভিন্ন। কিছু মানুষ অভিযোগ করছে, ১০০ বছর আগে দলিল অনুযায়ী তাদের বাড়ি নদীর সীমানার বাইরে, সেই বিষয়গুলো না দেখে বিআইডব্লিউটিএ ভেঙে ফেলছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে নদীর অবৈধ স্থাপনা অপসারণ শুরু হয়েছে। ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে আরও বেশি ফোর্স অ্যাপ্লাই করেছি আমরা। কাজেই বিষয়টি বেশি আলোচিত হয়েছে। তালিকা যেটা আছে সেটা ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত।’
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১০০ বছর আগে কি কেউ এভাবে স্থাপনা তৈরি করেছে, এমন তো ঢাকা শহর ছিল না। সব ধরনের সার্ভে করে এটা করা হয়েছে। আমরা কখনই জনগণের প্রতিপক্ষ নই, জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করছি। আমরা কাউকে কোথাও থেকে উচ্ছেদ করতে চাই না। আমরা শুধু নদীর প্রাণ ফিরিয়ে দিতে চাই। আমরা নদীগুলোকে যদি রক্ষা না করি তাহলে আমরা কেউ রক্ষা পাব না, এটা হচ্ছে বাস্তবতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেই জায়গা থেকেই আমরা এ পদক্ষেপগুলো নিয়েছি। কেউ যদি নিঃস্ব হয়ে যায়, গৃহহীন হয়ে যায়, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নিয়ে তাদের গৃহনির্মাণের ব্যবস্থা করে দেবে।’সভায় এসময় নৌপরিবহন সচিব মোঃ আবদুস সামাদ সহ নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের পরামর্শ প্রদান, সুপারিশ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।