কোস্টগার্ড শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেছেন, কোস্টগার্ড আজ আর ‘ঠুটো জগন্নাথ’ নেই। কোস্টগার্ড শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। দেশি-বিদেশি জাহাজ, স্পিডবোর্ড ও পেট্রল বোর্ডের সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে আমরা কোস্টগার্ডকে আজকের শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত করেছি। কোস্টাল এরিয়া তো বটেই চোরাচালান রোধ, অবৈধভাবে মৎস্য আহরণ ও মাদক চোরাচালান বন্ধে সফলভাবে কাজ করেছে কোস্টগার্ড।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কোস্টগার্ড সদর দফতরে বাহিনীর রজতজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।
এ সময় কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক(ডিজি) রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হক উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি নতুন নতুন কাজ ও কোস্টগার্ডের দায়িত্বে ইনক্লুড (সংযোগ) হয়েছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য কোস্টগার্ড কাজ করছে। বর্তমানে কোস্টগার্ডের রয়েছে চারটি অফ পেট্রল বোর্ড, ২৩টি জাহাজ। রয়েছে ৯০টি বিভিন্ন শ্রেণির বোট। রয়েছে ৫৪টি আউট পোস্ট স্টেশন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানব ও মাদকপাচার, চোরাচালান রোধসহ নিরাপত্তা বিধানে কাজ করে চলছে কোস্টগার্ড। মৎস্য সম্পদ রক্ষা জাটকা নিধন ও মা ইলিশ মাছ আহরণ বন্ধে কোস্টগার্ড সাফল্যজনক অভিযান পরিচালনা করেছে। ২০১৯ সালে ১৯০০ কোটি টাকার অবৈধ দ্রব্যাদি আটক করেছে কোস্টগার্ড। বনজ সম্পদ রক্ষায় দুই কোটি টাকা সমমূল্যের বিভিন্ন প্রকার চোরাকারবারি মালামাল জব্দ করেছে। উপকূলীয় এলাকায় জীববৈচিত্র্য ও ইলিশ রক্ষায় কাজ করেছে কোস্টগার্ড।
তিনি বলেন, গভীর সমুদ্র বন্দরের অপারেশনাল কাজেও সাফল্য অনেক এ বাহিনীর। জলদস্যুদের হাত থেকে জেলেদের রক্ষার ক্ষেত্রেও কাজ করছে কোস্টগার্ড। খুব শিগগিরই উপকূলীয় এলাকায় একটি সার্ভিলেন্স সিস্টেম চালু করা হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদেরকে শিবির থেকে বেরিয়ে যাওয়া আটকাতে কাটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ চলছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি দুর্বল হয়ে পড়েছে কি না- জবাবে মন্ত্রী বলেন, মোটেও রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি দুর্বল হয়নি। আপনারা জানেন, ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে, যা টেকনাফের জনগণের তিন গুণ। তাদের নজরদারিতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ সকল বাহিনী কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোহিঙ্গা শিবিরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমাদের সেনাবাহিনী কাঁটাতারের বেড়া তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে। মূল উদ্দেশ্য, তারা যেন শিবির থেকে বের হয়ে আমাদের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে না যায়।
আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, এছাড়া, রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি আরও শক্তিশালী করতে ওয়াচ টাওয়ার এবং সিসিটিভি স্থাপন করা হচ্ছে। তারা যেন বের হতে না পারে সেজন্য আমাদের সকল বাহিনী তৈরি রয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা থেমে যায়নি, আলোচনা চলছে। আশা করছি, একদিন রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে মিয়ানমার।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. জাবেদ পাটোয়ারি, বিপিএম(বার), মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন মহাপরিচালক বেনজির আহমেদসহ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।