সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) বলেছেন, জেলায় পুলিশের পোস্টিং হবে লটারীর মাধ্যমে কোন তদবীর বা জ্যাকে পুলিশের পোস্টিং হবেনা। রবিবার সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ আয়োজিত মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা /কল্যাণ সভায় এসব কথা বলেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)। পুলিশ সুপার বলেন, আগে শোনা যেতো জেলার এক থানা থেকে অন্য থানায় এসআই দের পোস্টিং নিতে অনেক টাকা পয়সা খরচ হতো আর তাছাড়া তদবির তো ছিলোই। যার কারনে এসআই রা নতুন কর্মস্থলে গিয়ে ঐ বদলীর সময় খরচ হওয়া টাকা উসুল করতে নানা রকম গ্রেপ্তার বানিজ্যে জড়িয়ে পড়তো।
পুলিশ সুপার বলেন, মুজিববর্ষের অঙ্গিকার, পুলিশ হবে জনতার, উক্ত শ্লোগান কে সামনে রেখে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এসআই দের পোস্টিং হবে লটারির মাধ্যমে। কারন লটারীর মাধ্যমে বদলী হলে তাদের আর খরচ হবেনা ফলে নতুন কর্মস্থলে গিয়ে এসআই রা টাকার জন্য কোন রকম দূর্ণীতিতে জড়াবে না।
রবিবার সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন্সের ড্রিলসেডে মাসিক ক্রাইম কনফারেন্স সভা অনুষ্ঠিত হয়।এতে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)।
সভায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় ভালোকাজের স্বীকৃতি স্বরুপ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার দের কে সন্মানা ক্রেস্ট উপহার দেন পুলিশ সুপার।আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাবাভিক রাখায় ও অপরাধ দমনে বিশেষ অবদান ও চোরাই মোবাইল উদ্ধার করায় সাতক্ষীরা সদর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ মির্জা সালাহ্উদ্দিন কে শ্রেষ্ঠ সার্কেলের সন্মানতা ক্রেস্ট উপহার দেন পুলিশ সুপার।
এছাড়া অপরাধ দমনে বিশেষ অবদান রাখায় তারা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান ও ডিবির ওসি মহিদুল ইসলাম কে সন্মাননা ক্রেস্ট উপহার দেন পুলিশ সুপার।
এছাড়া অপরাধ দমনে বিশেষ অবদান রাখায় কলারোয়া থানার ওসি,পাটকেলঘাটা থানার ওসি ও শ্যামনগর থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত ইয়াছিন আলম চৌধুরী কে সন্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)।
এছাড়া রেকড ব্রেক পরিমান মাদক উদ্ধার,অস্ত্র উদ্ধার,ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি আটক ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী আটক করে জেলা ডিবি পুলিশের সেকেন্ড অফিসার হাফিজুর রহমান ও সাতক্ষীরা থানার সাব-ইন্সপেক্টর নুর আলম এবং সাতক্ষীরা থানার এসআই মানিক সাহা কে সন্মাননা ক্রেন্ট উপহার দেন পুলিশ সুপার।তবে এসআই ক্যাটাগরীতে সাতক্ষীরা থানার এসআই নুর আলম প্রথম ক্যাটাগরীতে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন বলে একাধিক সুত্র জানায়।
অপরদিকে জেলার এএসআই ক্যাটাগরীতে পুলিশ সুপারের নিকট থেকে সন্মাননা ক্রেস্ট অর্জন করেছেন সাতক্ষীরা থানার এএসআই শাহানুর আলম, কলারোয়া থানার এএসআই সাগর,কাটিয়া ফাড়ির এএসআই নাছির উদ্দীন প্রমুখ।সভায় পুলিশ সুপার পুলিশ সদস্যের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন ও সেগুলো দ্রুত সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।অপরাধ পর্যালোচনা সভা শেষে জেলা পুলিশের কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পুলিশ সুপার লটালীর মাধ্যমে জেলায় ১২ জন এসআই কে পোস্টিং দেন।লটাটির মাধ্যমে পোটিং দেওয়া কালে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বার বলেন, কোন টাকা-পয়সা বা তদবিরে পোস্টিং দেওয়া হবেনা জেলায় পোস্টিং হবে লটারির মাধ্যমে।
এসময় অপরাধ পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পদন্নোতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ,সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন, হেড কোয়ার্টার সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান,দেবহাটা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃইয়াছীন আলী,তালা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির,বিশেষ শাখার সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম,আরও ওয়ান মোঃআজম খান, বিশেষ শাখার ডিআইওয়ান মিজানুর রহমান,সাতক্ষীরা ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর হারুনুর রশীদ, সাতক্ষীরা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, ডিবির ওসি মহিদুল ইসলাম সহ বিভিন্ন ইউনিটের বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ৭.৩০ মিনিটে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ লাইন্সে মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। মাস্টার প্যারেডে সালাম গ্রহণ করেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)।এসময় মাস্টার প্যারেডে প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন।
মাস্টার প্যারেড শেষে পুলিশ সুপার পুলিশ লাইন্সের রিজার্ভ অফিস, অন্ত্রাগার ও মালখালা পরিদর্শন করেন। পরে তিনি সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের যানবাহন শাখা পরিদর্শন করেন।পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপার পুলিশ সদস্যের উদ্যেশ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা মুলক ব্রিফিং প্রদান করেন।