দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ঝুঁকি, কাজের পরিবেশ ও ঘুম-খাওয়া ঠিক না থাকায় পুলিশ বাহিনীতে অকাল মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে বলে মনে করেন র্যাবের মহাপরিচালক ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) পিপিএম(বার) । তিনি বলেছেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর হার কমানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়ার সময় হয়েছে।
রবিবার দুপুরে মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ২০২০’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. জাবেদ পাটোয়ারী, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল, ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এখন পুলিশ বাহিনী বড় হয়েছে। সেই সঙ্গে মৃত্যুর মিছিলও বাড়ছে। যেকোনো সহকর্মীর অকালে মৃত্যুই অনাকাঙ্ক্ষিত। তার মৃত্যু শুধু মৃত্যু নয়, পরিবারের ওপর বিপর্যয়। এটা মেনে নেওয়া কষ্টের।’
বছরের একটা দিন কয়েক ঘণ্টার অনুষ্ঠান করে স্বজনদের কষ্ট ভোলানো যায় না উল্লেখ করে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত এই মৃত্যুর হার কমাতে হবে। আগে ৩০-৪০ জন মারা যেত, তখন বাহিনী ছোট ছিল। এখন বাহিনী বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর মিছিলও বাড়ছে।’
গত বছর পুলিশের ৫৫০ জন সদস্য মারা গেছেন। এর মধ্যে কর্তব্যরত অবস্থায় মারা গেছেন ১৭৯ জন। অন্যদের মধ্যে অনেকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার কারণ পুলিশের কাজের পরিবেশ ও লাইফস্টাইল অনেকটা দায়ী বলে মনে করেন ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাহিনীর সদস্যদের খাওয়ার ঠিক নেই, ঘুমের ঠিক নেই। সব মিলিয়ে বিপদগ্রস্ত থাকে পুলিশ সদস্যরা।’
তবে আগের চেয়ে পুলিশে চিকিৎসাব্যবস্থার মান বেড়েছে জানিয়ে বেনজীর বলেন, ঢাকায় যে চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে তা তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।
পুলিশ সদস্যদের জন্য সাংগাঠনিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে আরও অনেক কিছু করার আছে বলে মনে করেন র্যাব-প্রধান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার পুলিশ বাহিনীর সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী সব সময় পুলিশকে বলেন, ‘তোমরা কিছু চাওয়ার আগে আমি সবকিছু দিই।’ তিনি যেটা বলেন সেটা তিনি করেন।”
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘পুলিশে মৃত্যুর মিছিল কমাতে আমাদের সব ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। যেহেতু আমরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করি, আমাদের দায়িত্ব বা পেশাটাই এ রকম। ঝুঁকি নিতেই আমরা এই পেশায় আসি।’
দেশের প্রয়োজনে যেকোনো সময় পুলিশের দুই লাখ সদস্য সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত উল্লেখ করে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও র্যাব প্রধান বলেন, ‘কিন্তু কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু আমরা চাই না।’