বাংলাদেশ পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাওয়া ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, পুলিশের প্রধান হিসেবে আমার প্রথম লক্ষ্য ও চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে জাতিকে রক্ষা করা।
বাংলাদেশ পুলিশ একটি পেশাদার বাহিনী। এ বাহিনীর সদস্যরা দেশের যে কোনো দুর্যোগে সাহসিকতার সঙ্গে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। যে কোনো পরিস্থিতিতে জীবন বাজি রেখে কাজ করে। যে কোনো সংকট ও মহামারির সময়ও তারা মানুষের পাশে থাকে। মানবিকভাবে কাজ করে থাকে। করোনার মতো বৈশ্বিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশ পুলিশ শতভাগ নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। আইজিপি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পর চলমান পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ যাতে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সংকট মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে পারে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করাই হবে প্রথম কাজ।
গত মঙ্গলবার ড. বেনজীর আহমেদকে আইজিপি নিযুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এরপর এক আলাপচারিতায় ভোরের কাগজকে এসব কথা জানান তিনি। আগামী ১৫ এপ্রিল বর্তমান আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি। এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকা বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী।
পুলিশের কাছে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি। যে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তারা সদা প্রস্তুত। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত। তবে এতে আত্মতৃপ্তির কিছু নেই।
তিনি বলেন, পুলিশকে সবসময় নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হয়, মাঠে থাকতে হয়। এই সময়ে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকার নির্ধারিত নিয়ম মেনে সবাই যাতে ঘরে থাকে তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে পুলিশ। সেইসঙ্গে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা লোকজনের চাহিদা পেলে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেয়ার কাজও করছে।
সামনের সময়গুলো আরো বেশি চ্যালেঞ্জের উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ বরাবরই ঝুঁকির মধ্যে কাজ করে থাকে। করোনা রোগের ভাইরাস কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে তার পরিবারের সদস্যরাও পাশে থাকছেন না। এ অবস্থায় পুলিশকেই জানাজা ও দাফন কাফনের কাজ করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশ তার কাজের মধ্যদিয়ে মানবিক পুলিশ হিসেবে জনগণের আস্থা অর্র্জন করেছে।
২০১৬ সালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া বেনজীর আহমেদ মিডিয়াতে কৌশলী ও সাহসী বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে দৃঢ়তার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানান। তার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মিডিয়া সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করায় পরবর্তীতে অপারেশন পরিচালনায় সহায়ক ভূমিকা রাখে। ২০১৩-১৫ সালের রাজনৈতিক আগুন ও পেট্রলবোমা সন্ত্রাস মোকাবিলায় তার সাহসী পদক্ষেপ সব মহলে প্রশংসা কুড়ায়। বিশেষ করে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর এ চার মাস ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, বোমা হামলা ও পুলিশকে টার্গেট করে আক্রমণ করা হলে তিনি সাহসিকতা ও বিচক্ষণতার মাধ্যমে তা মোকাবিলা করেন। খাদ্যে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নামিয়ে প্রশংসা কুড়ানো বেনজীর আহমেদ সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে একের পর এক দস্যুবাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেন। পুলিশের একাধিক ইউনিটে দায়িত্বশীল পদে কাজ করা বেনজীর আহমেদ মনে করেন, সরকারের আন্তরিকতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনা ভাইরাসের মহামারি থেকে সৃষ্টিকর্তা এদেশের মানুষকে রক্ষা করবেন। তবে এজন্য সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। সরকার ও প্রশাসনকে সহায়তা করতে হবে।
সূত্র: ভোরের কাগজ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জিমি, সিটিজেন জার্নালিস্ট, সাতক্ষীরা।
Copyright © 2024 Update Satkhira. All rights reserved.