সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুর এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু রাউফুজ্জামান ওরফে লাদেন বাবুর বিরুদ্ধে অন্যের ভূমি দখল ও মিথ্যে মামলা দিয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যে মামলার দায় থেকে অব্যহতি পাওয়ার দাবি জানিয়ে লাদেন বাবুর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন একই এলাকার মো. মনোয়ার হোসেনর স্ত্রী মোছাঃ তানজিলা খাতুন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সাতক্ষীরার কাটিয়া মৌজায় সিএস ৯৪, ৯৮ ও ৮৪৩ নং খতিয়ানসহ ডি.পি ৬৩৮ নং খতিয়ানে বাস্তভিটা, পুকুর ও ডাঙ্গাসহ মোট ০.৫৪১১ একর জমি পৈত্রিক সূত্রে মালিক আমার শশুর মৃত এরশাদ আলী।
গত ২ মে সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুর এলাকার মৃত আব্দুল মাজেদের ছেলে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু ও সুদখোর রাউফুজ্জামান ওরফে লাদেন বাবু (৩৫), তার বড় ভাই রাশেদুজ্জামান (৪২), রাশেদুজ্জামানের স্ত্রী মোছঃ শারমিন সুলতানা (৩৫), ডাঃ হাজী মাওঃ আব্দুল আজিজের ছেলে জামিল আনছারী (৩০) এবং সদর উপজেলার মাছখোলা গ্রামের মৃত খাতের আলী সরদারের ছেলে আব্দুল্লাহ(৪০)সহ আরো ১০/১২ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী আমার শশুরের পৈত্রিক ভিাটায় ঢুকে জোরপূর্বক পুকুরে মটর দিয়ে পানি উত্তোলন শুরু করে। এসময় আমরা মৌখিক ভাবে নিষেধ করলে উক্ত আসামীরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে লোহার রড, লাঠি ও রাম দা নিয়ে আমার ও পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালায়।
খবর পেয়ে কাটিয়া ফাড়ির এসআই সঞ্জিব ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে এসে দুই পক্ষকে শান্তিপূর্নভাবে বসবাস করার জন্য মৌখিক ভাবে নির্দেশ দিয়ে যায়।
এমতাবস্থায় আমরা সদর থানায় কর্মরত এসআই শ্যামা প্রসাদের নিকট একটি অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু পরে জানতে পারি আসামী সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু রাউফুজ্জামান ওরফে লাদেন বাবু আমিসহ আমার পরিবারের ১১ সদস্যের নামে একটি মিথ্যে মামলা দায়ের করেছে।
তানজিলা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, দেশ যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে জর্জারিত, ঠিক তখনই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এই পবিত্র রমজান মাসে সন্ত্রাসী রাউফুজ্জামান ওরফে লাদেন বাবু বে-আইনি ও জোরপূর্বকভাবে জমি দখল ও মিথ্যে মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করছে। আসামীরা বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজসহ আমাদের প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে।তিনি বলেন লাদেন বাবুর পিতা মৃত আব্দুল মাজেদ ছিলেন একজন মামলা বাজ। সাতক্ষীরা জজকোর্টে সরকারি ছুটির দিন বাদে সপ্তাহে ৫ দিনই যেতেন তিনি মামলা চালাতে।পিতার ধারাবাহিকতায় এখন দুই পুত্র মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রেস কনফারেন্সে তানজিলা আরো বলেন লাদেন বাবু আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে বলে যে, পরিবারের সবাইকে জেলে ঢুকিয়ে দিয়ে বাড়ি ঘর ভেঙ্গে জমি দখল করে নিবে। অবৈধ অর্থের মালিক হওয়ায় রাউফুজ্জামান বিভিন্ন নিরীহ মানুষের জমির ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে দখল করে থাকে। তাদের হুমকি-ধামকিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যে কোন মুহুর্তে এলাকার চিহিৃত সন্ত্রাসী লাদের বাবু আমাদের জান মালের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে।তানজিলা বলেন লাদেন বাবুর পকেটে কয়েক শ পরিচয় পত্র থাকে। কখনো লাদেন বাবু ইমাম পরিষদের সেক্রেটারি, কখনো ওলামায়ী লীগের সেক্রেটারি আবার কখনো বা লাদেন বাবু মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যান।
তার সম্পর্কে মুনজিতপুর গ্রামের প্রত্যেকটি শিক্ষিত মানুষের কাছে শুনলে লাদেন বাবুর আসল চেহারা জানা যাবে।তানজিলা বলেন, দাড়ি রেখে, পাগড়ি পড়ে হুজুর লেবাস ধারন করে লাদেন বাবু সমাজের সকল স্থানে গিয়ে প্রাধান্য পায় ইমোশনাল ব্লাক মেইল করে।
তানজিলা খাতুন আরো বলেন, ২০১৩ সালে জামাত শিবিরের সরাসরি উস্কানিদাতা ও অর্থদাতা এই লাদেন বাবু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নামে বিভিন্ন অশালীন মন্তব্য করে। এলাকায় রমরমা সুদের কারবার করে সে। এখন সে বিলুপ্ত ওলামা লীগের সাতক্ষীরা জেলার সাধারণ সম্পাদক দাবি করে জমি দখল করে বেড়াচ্ছে। ২০০৬ সালে এই ভূমিদস্যু লাদেন বাবুর মেজ ভাই অন্যের জমি দখল করতে যেয়ে মার্ডার হয় সদরের ধুলিহর কোমরপুর। ভূমিদস্যু লাদেন বাবু বেশ কিছুদিন আগে সুদের টাকা আদায় করতে যেয়ে গোলযোগে পড়ে।
সংবাদ সম্মেলনে তানজিলা খাতুন ন্যায় বিচার দাবি করে তারসহ পরিবারের সদস্যদের নামে দায়ের করা মিথ্যে মামলার দায় থেকে অব্যহতি পেতে ও সন্ত্রাসী রাউফুজ্জামান ওরফে লাদেন বাবু এবং তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) সহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রেস কনফারেন্সে এরশাদ আলীর ছোট পুত্র মুজিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, পুরুষলোভী লাদেন বাবু এলাকার ছোট ছোট ছেলেদের তাবলীগ জামাতে নিয়ে মসজিদের মধ্যে সবাই যখন ঘুমায় তখন লাদেন বাবু তাদের গোপন স্থানে হাত দেওয়ার চেষ্টা করলে মুনজিতপুরের আসাদ মসজিদের মধ্যে চিল্লায় ওঠে এবং তাবলীগের ইমামের কাছে অভিযোগ দেন লাদেন বাবুর বিরুদ্ধে।
আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান অসহায় মুজিবুর বলেন লাদেন বাবুর বলাৎকার অভ্যাস নিয়ে মুনজিতপুর জুবলী স্কুল মাঠে কয়েকবার বিচার বসেছে।এতেও ক্ষান্ত নয় লাদেন বাবু। একাডেমী মসজিদ কমিটির ভোটের সময় ও লাদেন বাবু মসজিদের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা করেন ও হাতা-হাতি করেন।যেটা তৎকালীন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক (আল্লাহর দান আয়রন এর মালিক) এর নিকট শুনলে ঘটনার সত্যতা মিলবে।
মুজিবুর অভিযোগ করে আরো বলেন, রাত ২ টা/৩ টা পর্যন্ত লাদেন বাবু কলেজপড়ুয়া কয়েকজন ছেলেকে নিয়ে চলাফেরা করেন এবং লাঠিয়াল বাহিনী হিসাবে তার বাড়িতে থাকতে দেন।মুজিবুর আরো বলেন,আফগান স্থানে যুদ্ধ বাধলে লাদেন বাবু সহ অঞ্জাতনামা কিছু ব্যক্তি সেখানে যান যুদ্ধ করতে, এ বিষয়টি জানাযানি হলে ২০০৮ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সেনাবাহিনী সদস্যরা লাদেন বাবু কে আটক করতে আসেন।সে সময় লাদেন বাবু পালিয়ে গেলে তাকে আর আটক করতে পারেন নি সেনাবাহিনীর সমস্যরা।
প্রেস কনফারেন্সে মুজিবারের সাথে তার ভাবী তানজিলা খাতুন, তার শালক সাংবাদিক ফারুক, তার ভাইপো পৌর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মিলন সহ পরিবারের সকল মহিলা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
- প্রেস বিজ্ঞপ্তি।