ইয়ারব হোসেন (সম্পাদক সমাজের আলো) : সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. তৈয়েবুর রহমান গালিব’র লাঞ্চনার অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় ঔষধের দোকানী মনিরুল ইসলামকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। ওই দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষন করে পুলিশ এ সিদ্ধান্ত নেয়। পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এ খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ঔষধ রদবদলকে কেন্দ্র করে এস. এম ড্রাগ হাউজের মালিক মনিরুল সরদারের হাতে মেডিকেল অফিসার ডা. তৈয়েবুর রহমান গালিব’র লাঞ্চিত হন বলে অভিযোগ করা হয়।
বিষয়টি একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইনসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) এঁর দিক নির্দেশনায় দ্রুত পুলিশের একটি টিম তদন্তে মাঠে নামে।
ঘটনার জেরে ফার্মেসী মালিককে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এ সময় পুলিশ তথ্য পায় দোকানের সিসি ক্যামেরায় ধারনকৃত ভিডিও। পুলিশ ওই দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখতে পায় লাঞ্চনার কোন ঘটনা ঘটেনি। ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রেসক্রিপশনের ওষুধ নিয়ে তর্কাতর্কি হয় আবার সবশেষে করমর্দনের মাধ্যমে উভয়ের মাঝে নিষ্পত্তিও হয়ে যায়। অথচ ডা. তৈয়েবুর রহমান গালিব তার ফেসবুক পেজে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় করে তোলেন। ডাঃ গালিবের ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে কিছু সাংবাদিক দ্রুত সংবাদ প্রকাশ করে বসেন। এতে করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ঝড় ওঠে।
এরপর চিকিৎকদের শীর্ষ সংগঠন বিএম এ , স্বাচিপ, কেমিস্ট এ্যান্ড ড্রাগ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ বিষয়টি অনুধাবন করে সমাধানের পথ খুজে বের করেন। পুলিশ কেমিস্ট এ্যান্ড ড্রাগ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের জিম্মায় মনিরুলকে মুক্তি দেয়।
তবে এ ব্যাপারে এস. এম ড্রাগ হাউজের মালিক মনিরুল সরদার বলেন, ‘হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তাছাড়া সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজ দেখলে সব বোঝা যাবে’।
দোকানী মনিরুল আরো জানান, ডাক্তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে হেনস্তা করেছে । আমি এই মিথ্যাচারের বিচার চাই। এসপি স্যার দ্রুত পর্যবেক্ষন করে ব্যবস্থা না নিলে আমি বড় ধরনের হয়রানি ও ক্ষতির মুখে পড়তাম। সঠিক তথ্য প্রকাশ করে যারা আমাকে সহযোগিতা করেছে তাদের সকলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়ত বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আসাদুজ্জামান এক রোগীর জন্য ব্যবস্থাপত্র লেখেন। দোকানদার সেই ঔষধ না দিয়ে অন্য ঔষধ দেয়। সেটি বদলানোকে ঘিরে উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে’।
এদিকে সদর থানা পুলিশ দোকানী মনিরুলকে শনিবার (৯ মে) বিকালে আটক করে তদন্ত করে সন্ধ্যায় ছেড়ে দিয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান জানান, আটককৃত মনিরুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটা ভূল বোঝাবুঝি ছিলো। ডাক্তারের অভিযোগের সাথে বাস্তবতার মিল পাওয়া যায়নি। তর্কাতর্কি’ হয়েছিলো মাত্র।