যৌতুক লোভী ব্যাংকার স্বামীর নির্যাতনে স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী এখন হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ঘটনাটি সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর সাহা পাড়া এলাকায় শনিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে এঘটনা ঘটে। এঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী রঞ্জন কুমার বৈদ্যকে আটক করেছে। অপরদিকে জখমী স্ত্রী কাজল রাণী সরকার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আটক ব্যাংকার স্বামী অগ্রণী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখায় কর্মরত ও স্ত্রী সদরের শিমুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বিগত ২০১১ সালের ৭ মার্চ হিন্দু শাস্ত্রীয় মতে অগ্নী স্বাক্ষী করে দেবহাটার শশাডাঙ্গা গ্রামের নিতাই বৈদ্য’র ছেলে যৌতুক লোভী রঞ্জন কুমার বৈদ্য’র সাথে ময়মনসিং জেলার পরিতোষ সরকারের কন্যা কাজল রাণী সরকারের সাথে বিবাহ হয়। বিবাহের সময় নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা, স্বর্ণ ও অন্যান্য সাংসারিক জিনিসপত্রসহ আরও চার লক্ষ টাকার জিনিসপত্র গ্রহণ করে রঞ্জন কুমার বৈদ্য’র পরিবার। বিবাহের পর দাম্পত্য জীবন চলাকালে কাজল রাণীর গর্ভে রঞ্জন কুমার বৈদ্য’র ঔরষে একটি কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করে, রুদ্রা (৮)।
কাজল রাণীর অভিযোগ সন্তান জন্ম গ্রহণের পরপরই তার শ^াশুড়ী সবিতা বৈদ্য’র কু-পরামর্শে তার নিকট ফের যৌতুক বাবাদ পঁচিশ লক্ষ টাকা দাবী করে বিভিন্ন সময় তার স্বামী শারিরীক নির্যাতন করিতে থাকে। কিন্তু সন্তানের মুখের দিকে তাকাইয়া সংসার করার লক্ষে আমি শত নির্যাতন সহ্য করে চাকরির টাকা ও সহকর্মীদের নিকট ধার ও লোন নিয়ে এ পর্যন্ত আমার স্বামীকে যৌতুকের টাকা বাবদ বিশ লক্ষ টাকা দিয়েছি। কিন্তু তাহাতেও তিনি ক্ষ্যান্ত হননি। বিভিন্ন সময়ে আরও যৌতুকের টাকা দাবী করে আমাকে নির্যাতন করতে থাকে।
শুক্রবার দুপুরের দিকে আমি রান্নার কাজ শেষ করে আমার ঘরে আসিলে আমার স্বামী তার বিশেষ টাকার প্রয়োজন বলিয়া আমার নিকট যৌতুক বাবদ নগদ আবারও পাঁচ লক্ষ টাকা দাবী করে। আমি উক্ত যৌতুক বাবদ পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে অস্বীকার করি এবং আমি আর কোন যৌতুকের টাকা দিতে পারবো না বলে জানালে আমার স্বামী উত্তেজিত হইয়া ঘরের মধ্যে রক্ষিত খাটের উপর হইতে উঠিয়া আমার তলপেটে স্বজোরে লাথি মারে এবং আমি সঙ্গে সঙ্গে ঘরের মেঝেতে পড়িয়া যাই। এসময় আমার যৌনাঙ্গ দিয়া রক্ত ক্ষরন হতে থাকে।
ফলে আমার তলপেট ও যৌনাঙ্গ জখম হয়। আমি কান্নাকাটি করিতে থাকিলে পার্শ্বের ঘর হইতে আমার শ^াশুরী আসিয়া আমাকে চড়, কিল, লাথি মারে ও এক পর্যায়ে আমার ঘরে থাকা গামছা নিয়া আমার স্বামী গলায় পেঁচাইয়া এক প্রান্তে এবং অপর প্রান্তে আমার শ^াশুরী ধরিয়া টানাটানি করিয়া আমার শ্বাসরোধ করিয়া হত্যার চেষ্টা করে।
এসময় আমার আত্মচিৎকারে ও ধস্তাধস্তি করিতে থাকিলে আমার স্থানীয়রা এসে আমাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় আমি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হই। বর্তমানে আমার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমি যৌতুক লোভী কসাই স্বামীর বিচার ও শাস্তি চাই।
এব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান জানান, যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং নির্যাতনকারী ব্যাংক কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার বৈদ্যকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি তদন্ত পূর্বক যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভূক্তভোগী ও তার পরিবার। এম জিললুর রহমান